HS Examination 2023

হাসিমুখেই শুরু জীবনের ‘প্রথম বড়’ পরীক্ষা

পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে নজরদারিতে কোনও খামতি রাখেনি সংসদ। কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রকে ‘সংবেদনশীল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলদা, মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৫
Share:

পরীক্ষা শেষে। ঘাটাল যোগদা সৎসঙ্গ শ্রীযুক্তেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে।

করোনা-কালে কার্যত পরীক্ষা না দিয়েই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছিল তারা। তাই ওদের কাছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাই হল ‘জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা’। তাই দুরু-দুরু বুকে একরাশ বাড়তি চিন্তার বোঝা নিয়েই পরীক্ষা দিতে গেল পড়ুয়ারা। কেউ ভুলল অ্যাডমিট কার্ড আনতে, কেউ রেজিস্ট্রেশন কার্ড আনতে।

Advertisement

পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি বাড়তি চিন্তায় ছিলেন তাঁদের অভিভাবকেরাও। অনেকে মানছেন, এর আগে তো এরা বোর্ডের পরীক্ষা দেয়নি। ফলে একটা ফাঁক তো তৈরি হয়েছে। সেই থেকে একটা ভয়ও কাজ করেছে। যদিও প্রথম দিনের পরীক্ষার পর এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অনেকেরই সেই ভয় কেটেছে। নারায়ণগড়ের এক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘প্রথমে তো খুব ভয় করছিল। আমরা তো করোনার সময়ের মাধ্যমিক ব্যাচ। জীবনে এই প্রথম বোর্ডের পরীক্ষায় বসছি। ভীষণ টেনশন হচ্ছিল। পরীক্ষার পর কিছুটা ভয় কেটেছে।’’ আবার নারায়ণগড় আরআরসিএলইউ শিক্ষানিকেতনের ছাত্রী দীপিকা আচার্যের কথায়, ‘‘এই প্রথম বাইরের সেন্টারে পরীক্ষা দিলাম। ভয় করছিল। কেমন বোর্ডের পরীক্ষা দিতে হয় জানাও ছিল না। তবে পরীক্ষার পর সেটা কেটেছে।’’ নারায়ণগড়ের বাসিন্দা অজয় গিরি নামে এক অভিভাবক বলছিলেন, ‘‘করোনার সময়ে এরা পরীক্ষায় বসেনি। তাই এদের মধ্যে একটা টেনশন লক্ষ্য করছিলাম।’’ বেলদার বাসিন্দা অভিভাবক লিজ়া সাহা বলেন, ‘‘পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় মেয়ের চিন্তা লক্ষ্য করেছি।’’ প্রসঙ্গত, এদিন প্রশ্নপত্র সহজ ছিল বলেই জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করে ও নানা দিক যাচাই করেই কেন্দ্রে ঢোকানো হয়। ইলেকট্রনিক্স হাতঘড়ি, রঙিন পিচ-বোর্ড, জ্যামিতি বাক্স নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঢুকতে দেওয়া হয়নি অভিভাবকদেরও।

সব মিলিয়ে দুই জেলায় প্রথম দিনের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ভালভাবেই মিটেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পরীক্ষা সংক্রান্ত ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইসরি কমিটির সদস্য অরূপ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘নির্বিঘ্নেই শুরু হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।’’ পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে নজরদারিতে কোনও খামতি রাখেনি সংসদ। কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রকে ‘সংবেদনশীল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে বাড়তি নজরদারি ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল আটকাতে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে পুলিশ ও মেডিক্যাল টিম ছিল। সংসদ জানিয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন বা অনান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র নিয়ে প্রবেশ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এদিন জঙ্গলপথে নজরদারি চালিয়েছে বন দফতর। জঙ্গল লাগোয়া কিছু এলাকার পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু এলাকায় পুলিশের ‘স্পেশাল পেট্রোলিং’ ছিল।

Advertisement

এদিন পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের সামনে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র, যুব সংগঠনকে। কেউ পরীক্ষার্থীদের দিয়েছে পেন, ফুল। কেউ জলের বোতল। বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমির সামনে নারায়ণগড় ব্লক টিএমসিপির পক্ষ থেকে পরীক্ষার্থীদের জল বোতল ও পেন দেওয়া হয়। অন্য দিকে মোহনপুর ব্লক টিএমসিপির পক্ষ থেকেও পরীক্ষার্থীদের পেন ও জল দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন