স্বীকৃতি: পুরস্কার হাতে অঙ্কুর মেহতা। —নিজস্ব চিত্র।
বাঁশ থেকে বায়ো ডিজেল তৈরি করে আন্তর্জাতিক ম়ঞ্চে নজর কাড়ল খড়্গপুর আইআইটি’র ছাত্র।
স্নাতকোত্তর স্তরে গবেষণায় বরাবর এগিয়ে আইআইটি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্নাতকস্তরের পড়ুয়ারাও যে পিছিয়ে নেই তারই প্রমাণ মিলল। মঙ্গলবার আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘সপ্তম আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন ও সবুজ শক্তি সম্মেলনে’ পুরস্কৃত হয়েছেন খড়্গপুর আইআইটি’র কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অঙ্কুর মেহতা। ৭-৯ ফেব্রুয়ারি প্যারিসে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলন ছিল প্রতিযোগিতামূলক। সেখানেই ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগে ‘সেরা মৌখিক উপস্থাপনা শংসাপত্র’ পেয়েছেন আইআইটি’র ছাত্র। কী ভাবে তৈরি হচ্ছে এই বায়োডিজেল? গবেষকরা জানিয়েছেন, বাঁশের ছাঁটের মধ্যে রয়েছে লিগনিম। তাই লিগনিম আলাদা করতে মিক্সারে বাঁশের ছাঁট গুঁড়ো করতে হবে। তার পরে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সেই লিগনিম বাদ দিতে হবে। অবশিষ্ট অংশ থেকে অনুঘটকের মাধ্যমে গ্লুকোজ বার করে তৈরি করতে হবে ইথানল। এই ইথানলই আসলে বায়োডিজেল। অঙ্কুর বলেন, “গবেষণায় বাঁশের যে অংশ ব্যবহার করেছি তা একেবারে অ-ভোজ্য বর্জ্য পদার্থ। এই পদার্থ কখনও খাবারের উৎসের সঙ্গে বিরোধিতা করে না। তাই এমন সাফল্য।’’ আইআইটির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সৈকত চক্রবর্তীর কথায়, “বাঁশের ছাঁট দিয়ে যখন দ্বিতীয় প্রজন্মের জৈব ডিজেল প্রস্তুত করা সম্ভব তখন এটি বাণিজ্যিক ভাবেও তৈরি করা যেতে পারে।”
আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের আলোচনায় ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগে প্রতিযোগিতায় ৮টি দেশের স্নাতকস্তরের পড়ুয়া, অধ্যাপকেরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানেই বিটেক পড়ুয়া অঙ্কুর সেরা বক্তা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। অঙ্কুর বলছিলেন, “এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম তা এক স্নাতকস্তরের পড়ুয়ার কাছে উৎসাহের।” অঙ্কুরের অধ্যাপক সৈকতের প্রতিক্রিয়া, “অঙ্কুরের সাফল্য প্রমাণ করল, যদি আমাদের কোনও স্নাতকস্তরের পড়ুয়া গবেষণার সময় ও সুযোগ পায় তবে সাফল্য পেতে পারে।”