বিতর্কিত: এই নির্মাণ ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
পুরসভার জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয় বানানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তুলেছেন দলেরই একাংশ। যদিও ‘দখলদারদে’র দাবি, জায়গাটি সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকাধীন।
এগরা পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের কাছে রয়েছে ওই জমি। জানা গিয়েছে, মহকুমা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের জন্য ২০০৮ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামীর কাছে পূর্ত দফতরের ওই জায়গাটির দখল পেতে আবেদন করে এগরা পুরসভা। সেই মতো ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরুষত্তোমপুর মৌজায় ৯২৫ দাগের ৬৬ ডেসিমেল জায়গা পুরসভাকে হস্তান্তর করে পূর্ত দফতর। পরে সেখানকার নিচু জায়গা ভরাট করে পুরসভা সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড গড়ে তোলে। বাস স্ট্যান্ডের পাশের ফাঁকা জায়গায় পুরসভার স্টল বানিয়ে ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন হয়।
অভিযোগ, বর্তমানে স্টল বানানোর ওই ফাঁকা জায়গা ‘দখল’ করে কার্যালয় বানাচ্ছেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতৃত্ব। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরসভায় বারবার জানানোর সত্ত্বেও কর্ণপাত করেননি পুরপ্রধান। দাবি, সরকারি জায়গায় বেদখল হয়ে গেলেও হেলদোল নেই পুরসভার। এ বিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা তাহের মল্লিক বলেন, ‘‘এই জায়গা সিরাজুল মল্লিকের নামে এক ব্যক্তির। সেখানেই আগে পার্টি অফিস ছিল। সেটা ভেঙে তা নতুন করে বানানো হচ্ছে।’’
এ প্রসঙ্গে এগরা ১ ব্লকের ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক মানবেন্দ্র হালদার বলেন, “বাস স্ট্যান্ডের ওই এলাকায় সরকার এবং পূর্ত দফতরের মোট ৪ একর ৩৮ ডেসিমেল জায়গায় রয়েছে। যেখানে ওই ঘর হচ্ছে সেই ৬৬ ডেসিমেল জায়গা সরকার পুরসভাকে হস্তান্তর করেছে। কিন্তু ওই জায়গার এখনও সরকারি নথিভুক্তি হয়নি। তবে সেখানে কোনও রায়ত জায়গা নেই।”
এগরার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা এগরা শহর তৃণমূলের সভাপতি স্বপন নায়েক বলেন, ‘‘এই ৬৬ ডেসিমেল জায়গা পুরসভাকে হস্তান্তর করেছে পূর্ত দফতর। সেখানে কোনও রায়ত জায়গা নেই। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন যুক্তি। জায়গার যাবতীয় কাগজ পুরসভায় রয়েছে। এখন সেই জায়গায় দখল করে কী করে বাড়ি বানানো হচ্ছে, সেটাই ভাববার বিষয়। পুরপ্রধান শঙ্কর বেরা এবং পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ারকে এ বিষয়ে বারবার জানানো হয়েছে। তার পরেও ওই জায়গায় নির্মাণকাজ হচ্ছে। সবটাই পুরসভার মদতে হয়েছে।”
জমি বিবাদ প্রসঙ্গে এগরা পুরপ্রধান শঙ্কর বেরার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘পুরসভার ওই জায়গায় আগে তৃণমূলের পার্টি অফিস ছিল। সেটা ভেঙে যাওয়ার ফলে নতুন করে বানানো হচ্ছে। যাঁরা তৃণমূলের পার্টি অফিস বানানোর বিরোধিতা করছেন, তাঁরা আসলে তৃণমূল নেতা নন। ওঁরা তৃণমূল বিরোধী বিজেপি ঘনিষ্ঠ লোক।’’
কাঁথি বিজেপি যুব মোর্চার সাংগাঠনিক সভাপতি শম্ভু চক্রবর্তী এ নিয়ে বলেন, ‘‘পুরপ্রধান শঙ্কর প্রধানের বক্তব্য ভিত্তিহীন। স্বপন নায়েকের সঙ্গে বিজেপি’র কোনও সম্পর্ক নেই। উনি রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূল করেন। তবে বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে তিনি যে প্রতিবাদ করেছেন, তার পূর্ণ সমর্থন করে বিজেপি।’’