অবস্থান-বিক্ষোভ চলাকালীন নাম না করে প্রতিপক্ষ নেতার পা কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তমলুক কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর। ওই ঘটনায় তমলুক থানায় সিদ্ধার্থের বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করল তমলুক ব্লক প্রশাসন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিজেপির ওই কর্মসূচির কোনও অনুমতিও ছিল না।
ময়নার বাকচায় বিজেপি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার তমলুকে ওই অবস্থান-বিক্ষোভ করে বিজেপি। সেখানেই সিদ্ধার্থ বলেছিলেন, ‘‘ভোটটা মানুষকে গণতান্ত্রিকভাবে দিতে দিন।... যদি এই অনুরোধ না শোনেন, তা হলে আপনি এক পা বাড়ালে আপনার দাদার পা-টা আমি কেটে নেব।’’ নাম না করলেও ওই ‘হুমকি’ আসলে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারীকে দেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। ওই রাতেই সিদ্ধার্থের বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ব্লক নির্বাচন দফতরের তরফে ‘মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট’-এ একটি দল বিজেপির ওই কর্মসূচির ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেছিল। তা পর্যালোচনার পরে তমলুক ব্লক প্রশাসনের তরফে সিদ্ধার্থ-সহ সেখানে হাজির অন্যদের বিরুদ্ধে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অনুমতি ছাড়াই বিজেপি ওই কর্মসূচিতে মাইক বাজানো হয়েছে। সে বিষয়েও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, তাদের তরফে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘সি ভিজিলে’ নির্বাচ কমিশনে নালিশ করা হয়েছে।
জেলাশাসক পার্থ ঘোষ শুক্রবার বলেন, ‘‘অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসন পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।’’
আজ, শনিবার বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা। তার আগেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের তরফে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় কিছুটা অস্বস্তিতে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।
দলের তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘যা হয়েছে, তাতে পুলিশ-প্রশাসন এরকম পদক্ষেপ করবে বলে আশঙ্কা করেছিলাম। তবে পুলিশ এখানে যে ভাবে পক্ষপাতমূলক আচরণ করল, তা তারা সাধারণ মানুষের কাছে ঢেকে রাখতে পারবে না। তাই ভোটে এর কোনও বিরূপ প্রভাবও পড়বে না।’’