বাংলার নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হল মেদিনীপুর-খড়্গপুর দুই শহরেই। নাচে-গানে-কথায় শনিবার দিনভর চলল পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন।
জাতীয় ক্রীড়া ও শক্তি সঙ্ঘের উদ্যোগে এ দিন মেদিনীপুরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামের সামনে থেকে প্রভাতফেরি বেরোয়। পরে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও। শিশু সংগঠন সব পেয়েছির আসরও প্রভাতফেরি বের করে বিদ্যাসাগর হলের মাঠ থেকে। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয় আসরের খুদেরা। মেদিনীপুর ড্যান্সার্স ফোরামের উদ্যোগে মেদিনীপুর কলেজ চত্বরে ‘বৈশাখী’ নামের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল একক ও সমবেত নৃত্য প্রভৃতি। আই-সোসাইটির উদ্যোগে এ দিন সকালে অরবিন্দনগর উদ্যানে এক অনুষ্ঠান হয়। ছিল সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা, নাটক প্রভৃতি। অনলাইন দৈনিক সাহিত্যপত্র বাংলা-র সপ্তম বর্ষ পদার্পণের দিনটিও পালন করা হয়। শহরের অশোকনগর রেনেসাঁ ক্লাবের উদ্যোগেও বর্ষবরণ করা হয়। মেদিনীপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়্যাল অ্যাকাডেমিতেও সকালে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়। সংস্থার পড়ুয়ারা নাচে-গানে বৈশাখকে বরণ করে নেয়। পরে এক বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে প্রবীণদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানায় তারা। ফল-মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
শহরের সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘ক্যামেলিয়া’-র উদ্যোগেও বর্ষবরণ হয়। মেদিনীপুর কলেজের পাশে নেতাজি মূর্তির পাদদেশে সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কথায়-গানে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। মেদিনীপুরে বর্ষবরণ শুরু হয়েছিল অবশ্য শুক্রবার থেকেই। ওই দিন সন্ধ্যায় ‘সংজ্ঞাপন’ সংস্থার উদ্যোগে রবীন্দ্র নিলয়ে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
খড়্গপুর মহকুমা জুড়েও শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে গিয়েছিল নতুন বছরের আবাহন অনুষ্ঠান। শুক্রবার রাতেই খড়্গপুর যুব সঙ্ঘ ক্লাব ও খড়্গপুর উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজক সংস্থার পক্ষে সঙ্গীতশিল্পী সৌমেন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা প্রতিবছরের মতো চৈত্রের শেষে ও বৈশাখের শুরুর সন্ধিক্ষণে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বর্ষবরণ করেছি।” শনিবার সকালে খড়্গপুর গোলবাজার দুর্গামন্দির কমিটির উদ্যোগে সাহিত্যবাসরের আয়োজন ছিল। সেই সঙ্গে চলেছে চণ্ডীপাঠ, গীতাপাঠ, নামকীর্তন। বিকেলে হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কমিটির কর্মকর্তা স্বপন শিকদার বলেন, “একই রীতি মেনে প্রায় ৮০বছর ধরে আমাদের এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। স্থানীয় শিল্পীরাই নাচ, গানে সামিল হন”
আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গে স্বস্তি দিয়ে ঝড় যাচ্ছে মায়ানমার
নববর্ষের সকালেই হাতে শুভেচ্ছাপত্র ও মিষ্টি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল তৃণমূলের খড়্গপুর শহর কমিটি। গোলবাজারে ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে শুভেচ্ছাপত্র দেন তৃণমূলের শহর সভাপতি প্রদীপ সরকার। তিনি বলেন, “শহরবাসীর সঙ্গে আরও বেশি জনসংযোগ গড়তে এর মতো ভাল দিন আর হয় না।”
শুধু দুই শহর নয়, শহরতলি এবং ব্লকেও বর্ষবরণের নানা অনুষ্ঠান হয়েছে এ দিন। ছিল বৈঠকী আড্ডাও। বেলদার বড়মোহনপুরে আবার নববর্ষ উপলক্ষে গণেশ পুজো ও মেলার আয়োজন করেছিল স্থানীয় ‘আমরা ক’জনা’ ক্লাব। ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতার একটি গণেশ মূর্তি পুজো করা হয়। সেই সঙ্গে হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।