Madhyamik Examination

পুলিশকে চা দিচ্ছে পড়ুয়ারা, ক্ষোভ

স্কুলের প্রধানশিক্ষক এধরনের ঘটনা তাঁর স্কুলের মধ্যে ঘটেনি বলে দাবি করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:২০
Share:

চায়ের পাত্র হাতে পড়ুয়াদের এই ছবি নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

ভিতরে চলছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর স্কুলের প্রবেশপথের সামনে পাহারায় থাকা পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাতে চায়ের কাপ তুলে দিচ্ছে স্কুলের পোশাক পরা কয়েকজন পড়ুয়া। তমলুক থানার ঘোড়াঠাকুরিয়া অজয় বিদ্যাপীঠ স্কুলের সামনে এই ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় শোরগোল পড়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে নাবালক পড়ুয়াদের দিয়ে এভাবে চা ও জল দেওয়ার ঘটনায় শিশুশ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। যদিও স্কুলের প্রধানশিক্ষক এধরনের ঘটনা তাঁর স্কুলের মধ্যে ঘটেনি বলে দাবি করেছেন।

Advertisement

সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে সিমেন্টের বেদিতে বসে কয়েকজন পুলিশ কর্মী। কাছেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার। ওই পুলিশ কর্মীদের কাছে গিয়ে স্কুলের পোশাক পরা তিনজন পড়ুয়া তাঁদের হাতে চায়ের কাপ তুলে দিচ্ছে। আর এক পড়ুয়া বিস্কুট তুলে দিচ্ছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের পাহারায় থাকা পুলিশ কর্মীদের হাতে নাবালক পড়ুয়াদের চা দেওয়ার ঘটনা সামনে আসার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকেরা।

জয়দেব দাস নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে নাবালক পড়ুয়াদের দিয়ে চা-বিস্কুট দেওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ওই কাজের জন্য স্কুলের নির্দিষ্ট কর্মী থাকা সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নাবালক পড়ুয়াদের দিয়ে এমন কাজ করানোয় আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাতে গুরুত্ব দেননি।’’

Advertisement

সোমবার দুপুরে ওই স্কুলে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে যে তিনজন পড়ুয়াকে চা-বিস্কুট দেওয়ায় কাজে লাগানো হয়েছিল তাদের মধ্যে একজন দশম শ্রেণির পড়ুয়া রয়েছে। ওই পড়ুয়া বলে, ‘‘স্কুলের এক শিক্ষক আমাদের ওই কাজ করতে বলেছিলেন। তাই আমরা স্কুলে গিয়ে ওই কাজ করেছি।’’ ওই পড়ুয়ার মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘স্কুলের পড়ুয়াদের দিয়ে এই কাজ করানো উচিত হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন এমন করলেন জানি না।’’

ঘটনা জানার পর সোমবার ওই স্কুলে যান শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সমর ঘড়া। তিনি বলেন, ‘‘চা-বিস্কুট দেওয়ার জন্য স্কুলের নির্দিষ্ট কর্মী রয়েছে। তার পরেও ছাত্রদের দিয়ে এই কাজ করানো নিয়ে অভিযোগ পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ঘটনা সত্যি। স্কুলে পড়ুয়াদের দিয়ে এভাবে কাজ করানো সম্পূর্ণ বেআইনি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’’

যদিও পড়ুয়াদের এমন কাজ করানোর অভিযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষক অশোককুমার দাস বলেন, ‘‘এমন ঘটনা নজরে পড়েনি। স্কুলের প্রবেশপথের বাইরে কে বা কারা এটা করেছে জানা নেই। আমরা কাউকে এই ধরনের কাজে নিযুক্ত করিনি।’’

মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের সেন্টার-ইন-চার্জ তথা শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের পঞ্চায়েত সম্প্রসারণ আধিকারিক ভাস্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে এধরনের ঘটনা নজরে আসেনি। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে এরকম ঘটনা হয়েছে কিনা জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন