ম্যানগ্রোভে কর্মসংস্থানের ভাবনা সুতাহাটায়

অরণ্য তৈরিতে একাধিক উদ্দেশ্য সিদ্ধি হবে বলে প্রশাসনের একাংশের মত। যার একটি, কর্মসংস্থান। এছাড়া এলাকার জীববৈচিত্র রক্ষার বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০৬:২০
Share:

এমন ম্যানগ্রোভেই ভরবে সুতাহাটা

শহরের মাঝে হবে ম্যানগ্রোভ অরণ্য। এরকম পরিকল্পনাই নিয়েছে হলদিয়া মহকুমার সুতাহাটা ব্লক প্রশাসন। সেই অরণ্যে লাগানো হবে সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কাঁকড়ার মতো ম্যানগ্রোভ। অরণ্য তৈরিতে একাধিক উদ্দেশ্য সিদ্ধি হবে বলে প্রশাসনের একাংশের মত। যার একটি, কর্মসংস্থান। এছাড়া এলাকার জীববৈচিত্র রক্ষার বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

পরিকল্পনা বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার। তিনি বলেন, ‘‘আমলাট এলাকায় আমাদের অফিসের সামনেই বেশ কয়েক একর জলাভূমি রয়েছে। সেখানেই পরিকল্পনা করে এই বনাঞ্চল তৈরি করা হবে।’’ বিডিও’র যুক্তি, উপকূলবর্তী এলাকা হলদিয়ায় ম্যানগ্রোভের পরিবেশ রয়েছে। অফিসের সামনের জলাভূমি পরিকল্পনা করে সাজিয়ে নিলেই সেখানে সুন্দরী, গরান, গেওয়া, বাইন, কাঁকড়া গাছ লাগানো যাবে।

বিডিও জানিয়েছেন, ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরি হবে একশো দিনের প্রকল্পে। এর ফলে এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে বলে মনে করছেন প্রশাসনের একাংশ। কারণ এই বনাঞ্চল পরে ব্লকের আরও কিছু জায়গাতেও তৈরি করা হবে। শুধু অরণ্য নয়, একশো দিনের কাজে তৈরি করা হবে ‘হারিয়ে যাওয়া গাছের’ নার্সারিও।

Advertisement

অবশ্য ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরির পিছনে পরিবেশ রক্ষার চেষ্টাও একটা বড় কারণ। বিশেষ করে জীববৈচিত্র রক্ষা। নতুন বনাঞ্চলে জলাভূমির বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। সুতাহাটা এলাকা ফিশিং ক্যাট বা বাঘরোলের স্বাভাবিক বসত। বিভিন্ন কারণে বর্তমানে বিপন্ন এই প্রাণী। মাঝে মাঝেই উদ্ধার হয় বাঘরোল।

সুতাহাটা ব্লক প্রশাসনের দাবি এই ধরনের উদ্যোগ করলে বাঁচার স্বাভাবিক পরিবেশ পাবে বাঘরোলের মতো বিভিন্ন প্রাণীও। এলাকায় বিভিন্ন জলাশয়ে প্রচুর কচুরিপানা জমে। পরিবেশ বজায় রেখে কচুরিপানাকে কী ভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক স্তরেও।

সম্প্রতি ব্লকে জীববৈচিত্র নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে হলদিয়া পুরসভা এলাকার জীববৈচিত্র প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত অশ্বিনী কুমার মুনিয়ান এবং রাজ্য জীববৈচিত্র প্রকল্পের ডিরেক্টর অনির্বাণ রায় ও সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২৪ জন তরুণ-তরুণীকে। সেখানেই উঠে আসে এই পরিকল্পনার কথা। পরিবেশ বিজ্ঞানী অনির্বাণ রায় চান, এলাকার হারিয়ে যাওয়া গাছগাছালির ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ তৈরি হোক। আর এই কাজ করার জন্যই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তরুণ তরুণীদের। ঠিক হয়েছে তিন সপ্তাহের মধ্যেই এই তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। যাঁরা কাজ করবেন তাঁরা সম্মানিক পাবেন বলে বিডিও জানান।

হলদিয়ায় জীববৈচিত্র নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা অশ্বিনীবাবু জানান, হলদিয়ার জীববৈচিত্র খুব দ্রুত কমছে। এই তথ্যভাণ্ডার তৈরি হলে এর ওপর ভিত্তি করেই পরের পরিকল্পনা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন