আজ সকালে নন্দীগ্রামে বক্সী, শুভেন্দুও
Nandigram

শহিদ স্মরণে পারদ চড়ছে হলদির তীরে

বি‌ধানসভা নির্বাচনের আগে নন্দীগ্রামের শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহিদ-স্মরণ অনুষ্ঠান ঘিরে কার্যত রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেমে পড়েছে যুযুধান তৃণমূল ও বিজেপি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৩
Share:

নন্দীগ্রামে চলছে শহিদ স্মরণের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।

বি‌ধানসভা নির্বাচনের আগে নন্দীগ্রামের শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহিদ-স্মরণ অনুষ্ঠান ঘিরে কার্যত রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেমে পড়েছে যুযুধান তৃণমূল ও বিজেপি।

Advertisement

৭ জানুয়ারি ওই অনুষ্ঠানে প্রতি বছরের মতো এবছরও শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হবে। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী প্রতিবছরই দিনটি নন্দীগ্রামে পালন করেন। অন্যদিকে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে এ দিন হাজির হবেন নন্দীগ্রামে। দু’দলের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হলেও এদিনের কর্মসূচির মধ্যে স্থানগত দূরত্ব খুবই কম। শুভেন্দু পরবর্তী তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের সকলেরই এখন চোখের বালি শুভেন্দু। নিজের পুরনো দলকে ছেড়ে কথা বলছেন না শুভেন্দুও। এই আবহে আজ, বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে দু’দলের উপস্থিতি নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে তৃণমূলের কর্মিসভাও। তবে গোলমালের আশঙ্কা থেকে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। হলদিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ বলেন, দু’ দলের অনুষ্ঠানেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয় সেদিকে কড়া নজর রাখছে পুলিশ।’’

২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গুলিতে শেখ সেলিম, ভরত মণ্ডল ও বিশ্বজিৎ মাইতি শহিদ হন। তরপর থেকে প্রতিবছর ভাঙ্গাবেড়িয়ার শহিদ বেদীতে প্রদীপ জ্বালিয়ে, মাল্যদান করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তেখালি শহিদ মিনারে শহিদদের স্মরণ করতেন শুভেন্দু অধিকারী। দলবদলের কিছুদিন আগে থেকে তিনি দাবি করতে শুরু করেন শহিদ মিনারের মালিকানা তাঁরই। এবছরও তিনি সেখানে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাবেন।

Advertisement

এদিকে ভাঙাবেড়িয়া শহিদ বেদীতে মাল্যদান করে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে নন্দীগ্রামে এদিন আসছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তেখালি থেকে ভাঙাবেড়িয়ার দূরত্ব খুব বেশি নয়। প্রায় ঢিল ছোড়া দূরত্বেই থাকবেন সুব্রত ও শুভেন্দু। দু’পক্ষই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে অনুষ্ঠান করছে। দু’দলই অনুষ্ঠানে রাজনীতিকে সরিয়ে রেখে শহিদদের পরিবারের পাশে থাকার দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত তা বজায় থাকবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে দু’দলের নেতা-কর্মীরা। কারণ ইতিমধ্যেই এই নিয়ে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, শুভেন্দু অধিকারীর কালো টাকায় শহিদমিনার তৈরি হয়েছে। তাই তিনি মালিকানার দাবি করছেন। সে জন্য ওখানে তৃণমূলের কেউ থাকবে না। সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে শহিদ বেদীতে মাল্যদান ও শহিদ স্মরণ করা হবে। তোপ দেগেছে বিজেপিও। তাদের প্রশ্ন, এতদিন তৃণমূল নেতৃত্বের শহিদদের কথা মনে পড়েনি? সামনে যখন বিধানসভা ভোট, তখন তাদের শহিদদের কথা মনে পড়েছে!

তৃণমূল সূত্রে খবর, এদিন শহিদ স্মরণের পর বেলা ১০টা নাগাদ সীতানন্দ কলেজ মাঠে দলের কর্মিসভায় থাকবেন সুব্রত বক্সী। থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দুই রাজ্য নেতা সেখানে কী বার্তা দেন সেদিকে নজর থাকবে স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘প্রতিবছরই আমরা শহিদ বেদী এবং শহিদ মিনার দু'জায়গাতেই শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতাম। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী শহিদ মিনারে নিজের মালিকানা আছে বলে দাবি করেছেন। তাই তৃণমূলের কেউ সেখানে যাচ্ছেনা। শহিদদের নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি।’’

বিজেপির নন্দীগ্রাম ১ দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতির জয়দেব দাস বলেন, ‘‘এতদিন শুভেন্দুবাবু শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতি বছর তাঁদের স্মরণ করেছেন। আজ হঠাৎ তৃণমূলের নেতাদের শহিদদের কথা মনে পড়ে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন