TMC

সৎ নেতা চাই, পিকে-র নজর বিরোধীর ঘরে

‘পাখির চোখ’ আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন। তৃণমূলের হয়ে তার রণনীতি তৈরিতে ব্যস্ত ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর টিম।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০১:১১
Share:

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র।

তৃণমূলে ‘সৎ’ আর ‘স্বচ্ছ’ নেতা কি তবে কম পড়ল!

Advertisement

‘পাখির চোখ’ আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন। তৃণমূলের হয়ে তার রণনীতি তৈরিতে ব্যস্ত ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর টিম। শাসক দলেরই এক সূত্রে খবর, সম্প্রতি ‘টিম পিকে’-র প্রতিনিধিরা এসেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরেও। তাঁদের নজর রয়েছে বিরোধী-শিবিরে। লক্ষ্য, ‘সৎ’ এবং ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তির বিরোধী নেতা-কর্মীদের তৃণমূলে যোগদান করানো। ইতিমধ্যে বিরোধী-শিবিরের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাবও দিয়েছেন তাঁরা। দিয়েছেন নির্দিষ্ট পদপ্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি। জানা যাচ্ছে, বিজেপি, কংগ্রেস, বাম— সব দলের সঙ্গেই কথাবার্তা চলছে। গেরুয়া শিবির ভাঙানোর সম্ভাবনাই বেশি।

‘টিম পিকে’ কি তৃণমূলের জন্য ‘সৎ’ নেতা খুঁজছে?

Advertisement

সদুত্তর এড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘পিকে-র টিম নিয়ে কিছু বলার নেই। ওরা ওদের মতো কাজ করছে। এটুকু বলতে পারি, বিরোধী দলগুলির নেতা-কর্মীদের অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়েছেন। কথাবার্তা চলছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূল দল ভাঙানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পারবে না।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খানেরও মত, ‘‘দল ভাঙানোর চেষ্টা করতেই পারে। তবে তৃণমূল সুবিধে করতে পারবে না।’’

অগস্টের গোড়ায় তৃণমূলের নবগঠিত রাজ্য সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়াও ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর ছিলেন বলেই জানা যাচ্ছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজ্যস্তরে এই কমিটিকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তৃণমূলে জেলাস্তরে রদবদল হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ফের অজিত মাইতিই জেলা সভাপতি ও দীনেন রায়ই জেলা চেয়ারম্যান থেকে গিয়েছেন। তবে নতুন তিনজন কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন— রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া, কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা এবং খড়্গপুরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার। এ বার ব্লকস্তরে সাংগঠনিক রদবদল হবে। ইতিমধ্যে জেলা থেকে রাজ্যে প্রস্তাব গিয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্বই নেবেন।

ঘটনাচক্রে, ঠিক এই সময়েই জেলায় এসেছে পিকে-র ওই টিম। জানা যাচ্ছে, তাদের দু’জন সদস্য, হিন্দি এবং ইংরেজিতে সাবলীল ও ভাঙা বাংলা বলতে পারা দুই যুবক বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। এঁদের আগে ভিন্ রাজ্যে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের। বিরোধী-শিবিরের এক জেলা নেতা মানছেন, ‘‘কয়েক দিন আগে ফোনে আমার সঙ্গে একজন যোগাযোগ করেন। বলেন, তিনি প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা থেকে বলছেন। পরে একাধিকবার ফোন করে জানিয়েছিলেন, দেখা করতে ইচ্ছুক। এতই জোরাজুরি করছিলেন যে, না করতে পারিনি।’’ ওই নেতা বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে ওই সংস্থার দু’জন আমার কাছে এসেছিলেন। কথা শুনে মনে হল, ওঁদের কাছে জেলার অনেক খোঁজখবরই রয়েছে। তৃণমূল এখন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লোকেদেরই বিভিন্ন দায়িত্ব দিতে চাইছে।’’ প্রস্তাব পেয়েও ওই বিরোধী নেতা অবশ্য প্রত্যাখ্যান করেছেন। দিন কয়েক আগে মেদিনীপুর গ্রামীণের এক বিরোধী নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে ওই টিম। সোমবারও মেদিনীপুরে ওই টিম ‘সক্রিয়’ ছিল বলে দলেরই এক সূত্রে খবর।

শাসক দলের অনেকে মানছেন, পরিস্থিতি যা তাতে বিরোধী না ভাঙালে এবং তৃণমূলের দলত্যাগী আর নিষ্ক্রিয় কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে না পারলে বিধানসভায় প্রত্যাশিত ফল করা কঠিন। দলত্যাগীদের ফেরাতেও সচেষ্ট টিম পিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন