বিয়েতে না, পুড়ে ‘আত্মঘাতী’ কিশোরী 

সম্প্রতি জামাল ওই সম্পর্ককে অস্বীকার করে। দাবি, সেই অভিমানে দিন চারেক আগে গায়ে কেরোসিন ঢেলে ওই নাবালিকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তার দেহের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০০:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

অগ্নিদগ্ধ এক নাবালিকার মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল পাঁশকুড়ার চৈতন্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মৃত নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, এক ব্যক্তি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে সহবাস করে। পরে বিয়ে করতে সে অস্বীকার করায় অভিমানে ওই নাবালিকা দিন কয়েক আগে গায়ে আগুন দেয় বলে অভিযোগ। যদিও এ ব্যাপারে মৃতার পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত থানায় এফআইআর দায়ের হয়নি। তবে তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, নাবালিকা গায়ে আগুন দেওয়ার দিন তারা থানায় একটি জিডি করেছিলেন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, পাঁশকুড়ার চৈতন্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক গ্রামের বাসিন্দা শেখ জামালউদ্দিন মাস ছয়েক আগে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। জামালউদ্দিন সেনাবাহিনীতে কর্মরত। মেয়েটি নাবালিকা হওয়ায় বিয়ের ব্যাপারে দুই পরিবারেরই আপত্তি ছিল। মেয়ের পরিবারের দাবি, জামাল নাছোড়বান্দা হওয়ায় কয়েকমাস আগে দুই পরিবারই পাঁশকুড়া থানার দ্বারস্থ হয়। সেখানে ঠিক হয় মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে উভয়ের সম্মতি থাকলে বিয়ে হতে পারে।

অভিযোগ, ওই সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করে জামাল ওই নাবালিকার সঙ্গে ঘুরতে যেত। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়ে বলে অভিযোগ মৃতার পরিবারের। সম্প্রতি জামাল ওই সম্পর্ককে অস্বীকার করে। দাবি, সেই অভিমানে দিন চারেক আগে গায়ে কেরোসিন ঢেলে ওই নাবালিকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তার দেহের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। মঙ্গলবার রাতে তমলুক জেলা হাসপাতালে নাবালিকার মৃত্যু হয়। সেই খবর সমানে আসতেই এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে।

Advertisement

ময়নাতদন্তের পর বুধবার রাতে নাবালিকার দেহ এসে পৌঁছয় গ্রামে। এর পরই উত্তেজিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত জামালউদ্দিনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মৃতের এক প্রতিবেশী শেখ মইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘গায়ে কেরোসিন দিয়ে আত্মহত্যার দিন পাঁশকুড়া থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। নাবালিকাটির মৃত্যুর জন্য দায়ী জামালউদ্দিন। আমাদের তরফে তার বিরুদ্ধে শীঘ্রই এফআইআরও দায়ের করা হবে।’’

মা জোরিনা বিবি বলেন, ‘‘মেয়ের ১৮ বছর হলে জামালউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। জামাল আমার মেয়েকে নিয়ে ঘুরত। কিছুদিন আগে ফোনে জামাল সেই সম্পর্ক অস্বীকার করে এবং মেয়েকে মরতে বলে। সেই অভিমানেই মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি ওর শাস্তি চাই।’’

জামালউদ্দিন বর্তমানে জয়পুরে কর্মরত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তার পরিবারের সঙ্গে চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন