মেডিক্যালে বিপর্যস্ত টেলি-পরিষেবা

রাস্তার পাশে নিকাশি নালা তৈরির জন্য মাটি খোঁড়ার সময় তার কেটে গিয়েছে। ফলে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টেলি-পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। এখন বিভিন্ন সরঞ্জামের অনলাইন বরাত দিতে হয়। নেট-সংযোগ না থাকায় সেই বরাত দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ০১:০৯
Share:

নিকাশি নালার জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে কেবল্‌ কেটেই বিপত্তি। — নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার পাশে নিকাশি নালা তৈরির জন্য মাটি খোঁড়ার সময় তার কেটে গিয়েছে। ফলে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টেলি-পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। এখন বিভিন্ন সরঞ্জামের অনলাইন বরাত দিতে হয়। নেট-সংযোগ না থাকায় সেই বরাত দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেক সরঞ্জামের বরাত দেওয়াই হচ্ছে না! ফলে, আগামী দিনে বিভিন্ন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টেলিফোন দফতরে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে সমস্যার সমাধান ঠিক কবে হবে, সেই আশ্বাস পাননি। হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “টেলি-সংযোগ না থাকলে তো সমস্যা হবেই। টেলিফোন দফতরে সব জানানো হয়েছে।’’ মেদিনীপুরের এসডিওটি বিলাস ঘোষের বক্তব্য, “রাস্তার পাশে নিকাশি নালা তৈরির জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছে। মাটি খোঁড়ার সময়ই কেবল কেটে গিয়েছে। মাটি খোঁড়ার কাজ শেষ হলেই দ্রুত কেবল মেরামত করে দেওয়া হবে।’’ পরিস্থিতি দেখে বিকল্প হিসেবে নেট-প্যাকের ব্যবস্থা করতে হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। যে সব সরঞ্জাম অত্যন্ত জরুরি, সেগুলোই শুধু অনলাইনে বরাত দেওয়া হচ্ছে।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল জেলার সব থেকে বড় হাসপাতাল। প্রতিদিন এখানে বহু মানুষ আসেন। হাসপাতালে ১৮টি ওয়ার্ড, ৫৬০টি শয্যা রয়েছে। গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ৭০০-৭৫০ জন। দু’টি বড় ওটি রয়েছে। ডিজিট্যাল এক্স-রে, এমআরআই-সহ বিভিন্ন পরিষেবা মেলে। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইন্টার-কানেকশন রয়েছে। টেলিফোনে এক ওয়ার্ডের সঙ্গে অন্য ওয়ার্ডে যোগাযোগ করা হয়। সুপারের দফতর বা অন্য কোনও দফতর থেকেও সহজে ওয়ার্ডগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া যায়। কোনও সমস্যা হলে ওয়ার্ড থেকেও তখন সুপারের দফতর কিংবা অন্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। টেলি-পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় এ ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। সহজে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, “এ ভাবে টেলি-পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার ফলে নানা সমস্যাই দেখা দিচ্ছে। সমস্যা কারও অজানা নয়। কিন্তু, আমাদের কিছু করণীয়ও নেই! ”

Advertisement

ওই কর্তার কথায়, “এখন সময় মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার হাসপাতালে না এলে সমস্যা হবেই। আরও কিছু সরঞ্জাম হাসপাতালে সব সময় মজুত থাকা উচিত। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও মজুত থাকা উচিত। পরিস্থিতি দেখেই বিকল্প হিসেবে নেট- প্যাকের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। অবশ্য এতে সুরাহা হয়েছে নামমাত্রই।’’ হাসপাতাল ভবনের ঠিক পাশেই রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ। রাস্তার একদিকে কলেজ, অন্যদিকে হাসপাতাল। মেডিক্যাল কলেজের একপাশ দিয়ে একটি রাস্তা কলেজ মাঠের দিকে চলে গিয়েছে। এই রাস্তার পাশেই নিকাশি নালা তৈরি হওয়ার কথা। দিন কয়েক আগে নালা তৈরির জন্য মাটি খোঁড়া শুরু হয়। গত বুধবার মাটি খুঁড়তে গিয়ে টেলিফোন কেবলের তার কেটে যায়। মাটি খোঁড়ার কাজ চলছে জেসিবি মেশিন দিয়ে। এরফলেই এই সমস্যা। হাসপাতালের এক কর্তাও মানছেন, “এ ভাবে মাটি খোঁড়া অনুচিত। ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’’

ইতিমধ্যে রাতের অন্ধকারে কেবল চুরিও হয়েছে। মেদিনীপুর শহরে দুষ্কতী-দৌরাত্ম্য নতুন নয়। তারাই ওই তার কেটে নিয়ে পালিয়েছে বলে ধারণা। মেদিনীপুরের এসডিওটি বিলাসবাবু বলেন, “কিছু তার চুরি হয়েছে বলে শুনেছি। মাটি খোঁড়া শেষ হলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন