Nandigram

এক অঞ্চলে দুই সভাপতি, নন্দীগ্রামে কৌশলী তৃণমূল

তৃণমূলের মূল সংগঠনের রদবদলে তুলে দেওয়া হয়েছে জেলাওয়াড়ি পর্যবেক্ষক পদ। তাতে শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে বলেই মত তাঁর অনুগামীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৮:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি

অঞ্চল একটি। তবে দায়িত্ব পেলেন দু’জন।

Advertisement

নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া অঞ্চলে তৃণমূল সভাপতির পদ প্রায় এক মাস শূন্য ছিল। রবিবার সেই ভেকুটিয়া অঞ্চলের নতুন সভাপতি হিসেবে দু’জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে। অঞ্চলের অধীন মোট ২৫টি বুথ এলাকাকে দুটি ভাগে ভাগ করে একটি অংশের অঞ্চল সভাপতি করা হয়েছে রাজু গুড়িয়াকে (ভেকুটিয়া পার্ট-এ ) এবং অন্য অংশের ( ভেকুটিয়া-পার্ট বি ) অঞ্চল সভাপতি হয়েছেন রঘুনাথ মাইতি। দু’জনেই তৃণমূলের যুব সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

তৃণমূলের মূল সংগঠনের রদবদলে তুলে দেওয়া হয়েছে জেলাওয়াড়ি পর্যবেক্ষক পদ। তাতে শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে বলেই মত তাঁর অনুগামীদের। পূ:ব মেদিনীপুরে অবশ্য দলের রাশ অধিকারীদের হাতে রেখেই জেলা সভাপতি করা হয়েছে শিশির অধিকারীকে। সমান্তরাল ভাবে যুব সংগঠনে গুরুত্ব বেড়েছে অধিকারী বিরোধী হিসেবে পরিচিত অখিল গিরি শিবিরের। তবে নন্দীগ্রামের এই রদবদলে ভেকুটিয়া অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জনই অধিকারী ঘনিষ্ঠ বলেই দল সূত্রের খবর।

Advertisement

ক’দিন আগেই আমপানের ক্ষতিপূরণে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে নন্দীগ্রামে বারবার শাসকদলের বিরুদ্ধে আঙুল উঠেছে। তৃণমূলের একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য ও স্থানীয় নেতা-সহ মোট ১৮৮ জনকে শো-কজ়ও করা হয়। সেই সময়ই ব্লক সভাপতির নির্দেশে ভেকুটিয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি পঙ্কজ দাস পদত্যাগ করেছিলেন। এ দিন ভেকুটিয়া অঞ্চল সভাপতি নির্বাচনের জন্য দলের অঞ্চল কমিটির ৫৭ জন সদস্যকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান, জেলা পরিষদ সদস্য প্রণব মহাপাত্র, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ স্বদেশ দাস ও ব্লক কমিটির সদস্য শেখ খুসনবি। সেখানেই, ১০ টি বুথ নিয়ে গঠিত ভেকুটিয়া পার্ট-এ অঞ্চলের সভাপতি নির্বাচিত হন রাজু গুড়িয়া এবং ১৫ টি বুথ নিয়ে গঠিত ভেকুটিয়া পার্ট-বি অঞ্চল সভাপতি নির্বাচিত হন রঘুনাথ মাইতি।

দলের নন্দীগ্রাম-১ ব্লক সভাপতি মেঘনাদের ব্যাখ্যা, ‘‘ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত তথা অঞ্চল এলাকা অপেক্ষাকৃত বড়। তাই সাংগঠনিক কাজের সুবিধার্থে দু’টি অংশে ভাগ করে দু’জন সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে। সর্বসম্মতি ক্রমেই দু’জন নতুন অঞ্চল সভাপতি হয়েছেন।’’

ঘটনা হল, ভেকুটিয়া এলাকায় গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তৃণমূল। তার জেরে গত বছর লোকসভা নির্বাচনে ব্লকের অন্য অঞ্চলের তুলনায় এখানে দলের ফল খারাপ হয়েছিল। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অধীন নন্দীগ্রাম বিধানসভার ২৭৮টি বুথের মধ্যে যে ২৩টিতে বিজেপি এগিয়েছিল, তা রমধ্যে ৯টি বুথই ছিল ভেকুটিয়া অঞ্চলের। ফলে ওই এলাকায় দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের। দলেরই একাংশের মতে, স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যে কোন্দলের জেরে বিজেপির সমর্থন বাড়ছিল। আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিক্ষোভেও সামনে ছিল বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দলের এই দুর্বলতা ঘোচাতেই দু’জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এতে গোষ্ঠী কোন্দলের সম্ভাবনা আরও বাড়বে না? মেঘনাদের দাবি, ‘‘সবাই সমন্বয় রেখে কাজ করবেন। ব্লক থেকেও নজরদারি থাকবে। আর লোকসভা ভোটে কিছু বুথে পিছিয়ে থাকলেও ভেকুটিয়ায় এখন আমাদের সংগঠনিক পরিস্থিতি অনেকটা মজবুত হয়েছে।’’

তবে কি দুর্বল এলাকায় একের বদলে দুইয়ের এই কৌশলই এখন প্রয়োগ করবে তৃণমূল? এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘ভেকুটিয়ার ব্যাপারে ব্লক নেতৃত্বকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছিল। অন্যত্র এলাকা ধরে পরিস্থিতি বিবেচনা করে যা করণীয় সেটাই শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement