এতদিন কোথায় ছিলেন! জনসংযোগে গ্রামে গিয়ে প্রশ্নের মুখে বিধায়ক

নানা এলাকা ঘুরে তখন বেরা পাড়ায় পৌঁছন বিধায়ক। সেখানকার স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সুকুমার বেরার বাড়িতে কর্মী বৈঠক করেন। সেখানেই বিধায়ককে কাছে পেয়ে নানা কথা বলতে শুরু করেন সাধারণ কর্মীরা।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

জনসংযোগে বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে নিজের বিধানসভা এলাকার রাজনগর গ্রামে জনসংযোগে গিয়েছিলেন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই। সেখানে গিয়ে তিনি শুনলেন, ‘এতদিন আসেননি কেন?’, কেউ অনুযোগ করলেন, ‘দলের নেতারাই তো পক্ষপাতিত্ব করছে!’ কেউ আবার এলাকার উন্নয়ন কতটা হয়েছে সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। যাঁরা অভিযোগ করলেন তাঁদের সবাই এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসেবেই পরিচিত।

Advertisement

শুক্রবার সকাল ন’টায় রাজনগরে পৌঁছন শঙ্কর। প্রথমে প্রাক্তন শিক্ষক বিশ্বনাথ দাসঠাকুর, আরেক শিক্ষক রাজীব আলু এবং সিভিক ভলন্টিয়ার অর্ণব পাঠকের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর সকাল ন’টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পাড়ায় পাড়ায় ঘোরেন বিধায়ক। বিধায়ককে কাছে পেয়ে সাধারণ মানুষ একের পর এক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কেউ জানান, বার্ধক্য ভাতা মিলছে না, কেউ জানান সেচের সমস্যার কথা। কেউ আবার স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগের দাবিও করেন। বিধায়ক সব কিছু খাতায় লিখে রাখেন। বিলি করেন দিদিকে বলো কর্মসূচির ফোন নম্বর, স্টিকার প্রভৃতি। শঙ্করকে বলতে শোনা যায়, “দিদির নির্দেশেই গ্রামে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে সেটাও ওই নম্বরে জানাবেন।” কখনও গ্রামের মন্দিরে গিয়ে বসেন। প্রবীণদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়ে একসঙ্গে ছবিও তোলেন। গ্রামের ছোট-খাটো সমস্যাগুলি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

কিছুটা হলেও তাল কাটে সন্ধ্যায়। নানা এলাকা ঘুরে তখন বেরা পাড়ায় পৌঁছন বিধায়ক। সেখানকার স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সুকুমার বেরার বাড়িতে কর্মী বৈঠক করেন। সেখানেই বিধায়ককে কাছে পেয়ে নানা কথা বলতে শুরু করেন সাধারণ কর্মীরা। ওই গ্রামের যুবক তৃণমূল কর্মী অজয় দোলই বলেন, “গত পাঁচ বছরে বিধায়ক ক’বার গ্রামে এসেছেন? এখন আসতে হল কেন?” একই সঙ্গে তাঁর অনুযোগ, “এলাকায় কখনও কোনও তৃণমূল কর্মী আক্রান্ত হলে নেতৃত্বকে পাওয়া যায় না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে সুরাহা হয় না। উল্টে বিজেপি বলে দেগে দেওয়া হয়।” পরিমল চক্রবর্তী, ইন্দ্রজিৎ বেরা-সহ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, ‘‘এলাকার উন্নয়নে পক্ষপাতিত্ব তকরা হয়েছে। গ্রামবাসীদের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

অভিযোগের মুখে ব্লক নেতৃত্ব বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। গ্রাম থেকে ফিরে বিধায়কের দাবি, ‘‘কোথায় ঘাটতি, কোথায় দুবর্লতা সেটা জানতেই তো এই কর্মসূচি। সব তথ্য লিখিত ভাবে রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব। সব মিলিয়ে এটুকু বলতে পারি বিচিত্র অভিজ্ঞতা হল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন