—প্রতীকী চিত্র।
বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি-দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার ভোরে মোহনপুর ব্লকের শিয়ালসাই গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষামুণ্ডা গ্রামের ঘটনা ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে মহিষামুণ্ডা গ্রামের ১৭ ডেসিমেল সরকারি খাস জমিতে বাস করছেন প্রায় ১১টি পরিবার। এই পরিবারের সদস্যরা বিজেপি সমর্থক বলেই এলাকায় পরিচিত। সম্প্রতি ওই খাস জমিতে ২টি দোকান, একটি কোচিং সেন্টার ও ৯টি বাড়ি-সহ মোট ১১টি অবৈধ নির্মাণ গড়ে ওঠে। জমিটি খাস হলেও ওই জমিতে বসবাসকারী সুধীর গিরি, বংশীধর গিরি, রাধাকৃষ্ণ গায়েনদের দাবি, ওই জমি তাঁদের রায়ত সম্পত্তি।
সম্প্রতি গ্রামের একাংশ তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে ওই জমিতে বসবাসকরী লোকেদের গোলমাল বাধে। জমি খালি করতে তৃণমূল কর্মীরা চাপ দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ। জল গড়়ায় আদালতেও। গত ১৪ জুন ওই মামলায় মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট জমি খালি করার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পর থেকে গত কয়েকদিন তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে চাপানউতোর চলছিল।
জমি থেকে অবৈধ নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার জন্য রবিবার বিকেলে স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার চালানো হয়। অভিযোগ, সোমবার ভোরে কয়েকজন এসে ওই নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানালে বিজেপির কর্মীদের সঙ্গে গোলমাল বাধে। এরপরে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হলে উত্তেজনা বাড়ে। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সদস্য তথা বিজেপির যুব মোর্চার মণ্ডল সভাপতি মানস গিরির দাবি, “তাঁদের বাবা-কাকারা দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই জমিতে বসবাস করেছেন। এই জমি তাঁদের রায়ত জমি।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল ওই জমি দখল করতে ভুয়ো নথি দিয়ে আদালতে মামলা করেছিল। তাতে জমিটি সরকারি বলা হয়েছে। সরকারিভাবে নয়, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সোমবার ভোরে এসে আমাদের উচ্ছেদ করেছে। মারধরও করা হয়েছে।” এ নিয়ে পুলিশে অবশ্য কোনও অভিযোগ করেননি এলাকার বিজেপি কর্মীরা।
বিজেপির মোহনপুর মণ্ডল সভাপতি শক্তিপদ নায়েকের অভিযোগ, “১৯৮০ সাল থেকে বসবাসকারী আমাদের সমর্থক-কর্মীদের পরিবারকে উৎখাত করতে তৃণমূল চক্রান্ত করছে। ওঁরা দুষ্কৃতী দিয়ে ১১টি নির্মাণ ভেঙে দিয়ে ওই জমি ঘিরে রেখেছে। আমাদের কর্মীরা ভয়ে থানাতেও যেতে পারছেন না। তবে অভিযোগ করা হবে।”
অভিযোগ অস্বীকার করছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রদীপ পাত্র। তাঁর দাবি, “ওই জমিটি সরকারি। তাঁদের কয়েকজন সমর্থককে বিজেপি ভুল বুঝিয়ে ওই জমিতে বসিয়েছিল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মহকুমাশাসকের আদালত ওই জমির অবৈধ নির্মাণ সরাতে বলেছে। সরকারিভাবে জমি খালি করতেও প্রচার করা হয়েছে। এখন নিজেরাই জমি খালি করে ওঁরা আমাদের নামে বদনাম করছে।”