উরস উৎসবে মিলে গেল দুই বাংলা

মেদিনীপুর শহরের মিয়াবাজারে জোড়া মসজিদে প্রতি বছর ৪ ফাল্গুন দিনটি পালন করা হয়। সুফি সাধকের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এই দিনে জোড়া মসজিদে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ জড়ো হন।

Advertisement

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৫
Share:

বাংলাদেশের পুণ্যার্থীদের নিয়ে মেদিনীপুরে পৌঁছেছে ট্রেন। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

উরস উৎসব উপলক্ষে মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদে পুণ্যার্থীদের ভিড় জমতে শুরু করেছে দিন কয়েক আগে থেকেই। উৎসবে যোগ দিতে এসেছেন বাংলাদেশের পুণ্যার্থীরাও। শনিবার সকালে বিশেষ ট্রেনে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন পুণ্যার্থী মেদিনীপুরে এসেছেন। আজ, রবিবার রাতে ট্রেনটি ফের বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেবে।

Advertisement

ও পার বাংলা থেকে আসা পুণ্যার্থীদের স্বাগত জানাতে এ দিন সকালে মেদিনীপুর স্টেশনে পুরসভার পক্ষ থেকে বিশেষ ক্যাম্প খোলা হয়েছিল। ক্যাম্পে ছিলেন শহরের কয়েকজন কাউন্সিলর। খোলা হয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্পও। শুধু ও-পার বাংলাই নয়, এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকেও বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এসেছেন শহরে।

মেদিনীপুর শহরের মিয়াবাজারে জোড়া মসজিদে প্রতি বছর ৪ ফাল্গুন দিনটি পালন করা হয়। সুফি সাধকের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এই দিনে জোড়া মসজিদে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ জড়ো হন। ১১৭তম উরস উৎসব উপলক্ষে মিয়াবাজারে মেলাও বসেছে। মেলা প্রাঙ্গণে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই ভিড় করেন। উৎসব ঘিরে চিরাচরিত উৎসাহের ছবি দেখা দেখা গিয়েছিল শুক্রবারই। শনিবার মেলায় ভিড় উপচে পড়ে।

Advertisement

উরস উপলক্ষে ১৯০২ সাল থেকে বাংলাদেশের বিশেষ ট্রেন আসা শুরু হয়েছে মেদিনীপুরে। উরস যাত্রীদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে ভারত-বাংলাদেশ দু’দেশের উদ্যোগেই এই ট্রেন চলাচল শুরু হয়। পুণ্যার্থীদের সঙ্গে বিশেষ ট্রেনে করেই মেদিনীপুরে এসেছেন বাংলাদেশের সাংসদ কামরুন নাহার চৌধুরী। তাঁর কথায়, “বাংলাদেশের বহু মানুষ এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। প্রতি বছরই বিশেষ ট্রেন আসে। এ জন্য ভারত সরকারও সব রকম ভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে।” তাঁর কথায়, “ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক ভাল। আগামী দিনেও এই সম্পর্ক অটুট থাকবে।” ও পার বাংলা থেকে আসা এক পুণ্যার্থীও বলছেন, “এই দিনটিতে মেদিনীপুরে না আসতে পারলে মন খারাপ লাগে।”

ও পার বাংলার সঙ্গে এ পার বাংলার আত্মিক যোগের কথা মানছেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা রাজেশ হোসেন, শেখ সানিরাও। তাঁরা বলছেন, “উরস উত্সব যেন দুই বাংলাকে আরও একবার মিলিয়ে দেয়।” মেদিনীপুর পুরসভার উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের কথায়, ‘‘বাংলাদেশের প্রতি বরাবর এ দেশের আলাদা একটা টান রয়েছে। এই উত্সব যেন তারই যোগসূত্র। যেখানে দুই বাংলার মানুষ একত্র হন। শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। উৎসব আসা পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement