রেস্তোরাঁর সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
রেস্তরাঁয় মদ বিক্রি শুরুর পর থেকেই বিঘ্নিত হচ্ছে এলাকার নিরাপত্তা। জনবহুল এলাকা থেকে সরকার অনুমোদিত রেস্তোরাঁ ও বার সরানোর দাবিতে গর্জে উঠল জয়রামচক।
পুজোর আগে আবগারি দফতরের অনুমোদন নিয়েই দাসপুর-২ ব্লকের পলাশপাই অঞ্চলের জয়রামচকে চালু হয় এই রেস্তরাঁ কাম বার। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গৌরীচক-পাঁচগেছিয়া রাস্তার ধারে দোকান চালুর পর থেকেই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকায় মদ্যপদের আনাগোনা বেড়েছে। জনবহুল এলাকায় থাকা এই রেস্তরাঁর কাছেই রয়েছে অনেক বাড়ি। অনতিদূরে জয়রামচক প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় স্কুল পড়ুয়াদের। রাতেও ওই রাস্তা দিয়ে গ্রামের মহিলারা যাতায়াত করেন। অভিযোগ, রাস্তার ধারেই ঝাঁ চকচকে এই রেস্তরাঁয় মদ খেয়ে যুবকেরা মহিলাদের উক্ত্যক্ত করছে। মদ্যপদের ভয়ে এলাকার মানুষ রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করতে ভয় পাচ্ছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় আচমকাই জয়রামচক-সহ সংলগ্ন এলাকার মানুষ জোটবদ্ধ হয়ে দোকানটি ভাঙচুর চালায়। প্রথম সারিতেই ছিলেন মহিলারা। অভিযোগ, ঘণ্টা দুয়েক ধরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। একাধিক ফ্রিজ ভেঙে মদের বোতল বের করে নষ্ট করা হয়। মদের বোতল লুটও করা হয় বলে। গণেশ খাটুয়া নামে দোকানের মালিক-সহ আট-দশজন কর্মীকেও বেধড়ক মারধরও করা হয়। পাঁচ-ছ’টি মোবাইল ফোন লুঠ করা হয়। অভিযোগ, দোকানের ক্যাশবাক্স ভেঙে লক্ষাধিক টাকাও লুট করা হয়। যথেচ্ছ ভাবে দোকানের ভিতর ও বাইরে ভাঙচুর চালানোর পর নষ্ট করা হয় সিসি ক্যামেরাও। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
রাতেই দোকান কর্তৃপক্ষ দাসপুর থানায় মামলা করেন। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, “মদ দোকান বন্ধ করতে কেউ আন্দোলন করতেই পারে। দোকান ভাঙচুর, মারধর ঠিক নয়।” দোকানের মালিক গণেশ কাঠুয়ার দাবি, “স্ত্রীর নামে দোকান। সরকারি লাইসেন্স পাওয়ার পরই দোকান চালু হয়েছে। আচমকাই দোকানে ঢুকে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়। আমি থানায় জানিয়েছি।” পুলিশ জানিয়েছে,ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দোকানটি। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ও আবগারি দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আবগারি দফতরের সুপারিন্টেনডেন্ট একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “নিয়ম মেনেই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। কেন এমনটা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোকানটি বন্ধ রাখা হয়েছে।”