গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বিডিও। —নিজস্ব চিত্র।
রথের মেলা। অথচ গোটা গ্রামের মানুষ ঘরবন্দি! কারণ, পাগলা কুকুর। যার আক্রমণে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন জখম হয়েছেন। পাগলা কুকুর কারও হাত তো কারও পায়ে কামড় বসিয়েছে। তার পরে আতঙ্কে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন-২ ব্লকের শাবড়া পঞ্চায়েতের বেতরুই গ্রাম। পরিস্থিতি এমন হল যে, শুক্রবার গ্রামে টহল দিয়েছে পুলিশ। কাছেই রাখা আছে অ্যাম্বুল্যান্স। তার পরেও প্রায় সারা গ্রাম বাড়ি থেকে বেরোনোর সাহস পায়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ১৫ জনকে আক্রমণ করেছে এক বা একাধিক পাগলা কুকুর। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে শিশুও। কিন্তু বাগে আনা যায়নি সেই কুকুর বা কুকুরগুলোকে। আদতে একটি না কি একাধিক কুকুর আক্রমণ করছে, তা-ও বোঝা যায়নি। এমতাবস্থায় গ্রাম জুড়ে আতঙ্কের আবহ তৈরি হয়েছে। ওই খবর পেয়ে শুক্রবার গ্রাম পর্যবেক্ষণে যান দাঁতন-২ ব্লকের বিডিও অভিরূপ ভট্টাচার্য। তিনি গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে জখমদের তাড়াতাড়ি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য গ্রামেই রাখা হয় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। পরিস্থিতি দেখার পরে বিডিও বলেন, ‘‘ওই গ্রামে এবং আশপাশের সমস্ত পথকুকুরের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, কোন কোন কুকুর আক্রমণ করতে যাচ্ছে। তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
অন্য দিকে, বৃহস্পতিরবার বিকেল থেকে কুকুরের আতঙ্কে কার্যত গৃহবন্দি গ্রাম। শুক্রবার রথের দিনেও বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় যেতে পারেননি প্রায় কেউ। এ নিয়ে তৃণমূল ব্লক সভাপতি ইফতিকার আলি বলেন, ‘‘জখম ১৫ জনকে যাতে নিয়মিত হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যায়, সে জন্য গ্রামেই অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হয়েছে। আর যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশ নজরদারি করছে।’’
স্থানীয়দের একটি সূত্রে খবর, গ্রামে এমন ‘সন্দেহজনক’ চারটি কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানুষ দেখলেই দৌড়ে গিয়ে কামড়ে দিচ্ছে তারা। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘কুকুরের ভয়ে বাচ্চাদের নিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘরে বসে রয়েছি।’’ অন্য দিকে, প্রশাসন জানাচ্ছে, মনে করা হচ্ছে, সন্দেহজনক চারটি কুকুরের মধ্যে মারা গিয়েছে। কিন্তু বাকি তিনটি? তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এক বার চিনে ফেললেই ‘ডগ ক্যাচার’ দিয়ে তাদের ধরা ফেলা হবে, বলছে প্রশাসন।