প্রতীকী ছবি।
জেলায় এসে রেফারের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য সচিব অনিল বর্মা। পশ্চিম মেদিনীপুরের স্বাস্থ্যকর্তাদের ভর্ৎসনাও করেছেন তিনি। পাশাপাশি মেদিনীপুর মেডিক্যালের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সমন্বয় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সেই মতো এ বার সমন্বয় বাড়াতে বৈঠকের তোড়জোড় শুরু হল। রবিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “এ বার মেডিক্যালের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক হবে। বৈঠকে সব দিক নিয়েই আলোচনা হবে।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুও মানছেন, ‘‘জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক হলে সব দিক থেকেই সুবিধে।’’
এতদিন কি সমন্বয় বৈঠক হত না?
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এতদিন মেডিক্যালের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় বৈঠক করার তেমন সুযোগ ছিল না। মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু নিয়ে কখনও কখনও বৈঠক হত। মেডিক্যালের বৈঠকে যোগ দিতেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। সেখানে মৃত্যুর পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখা হত, মৃত্যুর কারণ নিয়ে পর্যালোচনা হত। কী ভাবে মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু কমানো যায়, সেই নিয়ে আলোচনা হত। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “এ বাদে মেদিনীপুর মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কেউ যোগ দিতেন। তবে সেখানে রেফার নিয়ে কোনও আলোচনা হত না। এ বার যে সমন্বয় বৈঠক হবে সেখানে শুধু রেফার নয়, আরও নানা দিক নিয়েই আলোচনা করা হবে।’’
দু’দিনের জেলা সফরে শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দল। নেতৃত্বে খোদ স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব অনিল বর্মা। জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে এই পরিদর্শন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল ছাড়াও শালবনি, ডেবরা, ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ঘুরে দেখেন স্বাস্থ্যকর্তারা, বৈঠকও হয়। রেফার নিয়ে ধমক দেওয়ার পাশাপাশি প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনারিক নাম লেখার মতো নানা খুঁটিনাটি বিষয়েও জোর দেন স্বাস্থ্য সচিব। এই পরিস্থিতিতেই সমন্বয় বৈঠকে জোর দেওয়া হচ্ছে।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, মেডিক্যালের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকটা জরুরি। অনেকে জ্বর নিয়ে সরাসরি মেডিক্যালে ভর্তি হন। কোনও এলাকার ৪ জন জ্বর নিয়ে মেডিক্যালে এলে ধরে নিতে হবে ওই এলাকার আরও ৪০ জন কমবেশি জ্বরে আক্রান্ত। কারণ, সকলে তো আর মেডিক্যালে আসেন না। মেডিক্যালে কোনও এলাকার রোগী জ্বর নিয়ে এসেছেন তা আমরা অনেক সময়ই জানতে পারি না। মেডিক্যাল তো আর রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পারবে না। সেই ব্যবস্থা জেলা স্বাস্থ্য দফতরকেই নিতে হবে। জ্বরে আক্রান্ত রোগী কোন এলাকার বাসিন্দা তা জানা থাকলে সেই এলাকায় রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।