আক্ষেপ শহরের পরিযায়ীদের একাংশের
100 day work

পুর-শহরে কেন নেই একশো দিনের কাজ!

পুর এলাকায় কেউ কাজ চাইলেই তাঁকে কাজ দেওয়ার মতো নির্দিষ্ট কোনও প্রকল্প নেই।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০১:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দু’জনেই সোনার কারিগর। দু’জনেই কাজ করতেন মুম্বইয়ে। একই মালিকের কারখানায়। করোনা পর্বে একসঙ্গে ফিরেছেন দু’জন। তবে একজন একশো দিনের কাজ পেয়েছেন। অন্যজন পাননি। কারণ, একজনের বাড়ি গ্রামে। অন্যজন থাকেন শহরে। পুর এলাকায় একশো দিনের কাজের সুযোগ নেই। তাই ঘাটাল শহরের কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা তপন মালের (নাম পরিবর্তিত) এখন বেকার হয়ে ঘরে বসে। উল্টোদিকে ঘাটাল ব্লকের শীতলপুর এলাকার বাসিন্দা বিকাশ পণ্ডিত ইতিমধ্যে একশো দিনের প্রকল্পের যুক্ত হয়ে হাজার টাকা রোজগার করেছেন।

Advertisement

পুর এলাকায় কেউ কাজ চাইলেই তাঁকে কাজ দেওয়ার মতো নির্দিষ্ট কোনও প্রকল্প নেই। তবে পুর শহরের জন্য রয়েছে ‘আরবান ওয়েজেস এমপ্লয়মেন্ট’ প্রকল্প। এটি একশো দিনের বিকল্প নয়। ছোট ছোট প্রকল্প তৈরি করে টাকা চাওয়ার সুযোগ এখানে নেই। যা রয়েছে তা হল, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজের সুযোগ। প্রশাসন সূত্রের খবর, পুর এলাকায় কেউ কাজ চাইলে ‘আরবান ওয়েজেস এমপ্লয়মেন্ট’ প্রকল্পে তাঁকে রাস্তা সংস্কার, ঝাঁট দেওয়া, নর্দমা পরিষ্কার, ময়লা সংগ্রহের কাজ দেওয়া হয়।

ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন পুরসভা গুলির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ‘আরবার ওয়েজেস এমপ্লয়মেন্ট’ প্রকল্পে বছরে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আসে। সেই টাকায় দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করানো হয়। বেশি মাত্রায় কাজ করানোর জন্য প্রকল্প অনুযায়ী টাকা বরাদ্দ হয় না। পুরসভার কাজের সঙ্গে প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, “পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শহরে এই প্রকল্পে বিকল্প কাজের ক্ষেত্র তৈরির পরিকল্পনা করা যেতে পারে।”

Advertisement

মহকুমা প্রশাসনের এক তথ্য বলছে, গ্রামীণ এলাকার মতো ঘাটালের পাঁচটি পুরসভা ঘাটাল, খড়ার, ক্ষীরপাই, চন্দ্রকোনা ও রামজীবনপুর শহরে হাজার পাঁচেক পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। বেসরকরি মতে হাজার সাতেক। এঁদের মধ্যে ঘাটাল শহরেই হাজার তিনেক ফিরেছেন। ছোট পুর শহর গুলিতে ওই সংখ্যাটা কম নয়। এই পরিযায়ী শ্রমিকদেরই কয়েকজন ঘাটালের প্রলয় সামন্ত, ক্ষীরপাই শহরের ফকির মণ্ডল, রামজীবনপুর শহরের মানস পালেদের প্রশ্ন, “শহুরে হোক বা গ্রাম। সমস্যা তো দু’ক্ষেত্রেই এক। সেখানে গ্রামীণ এলাকায় কাজের সুযোগ থাকবে, শহরে থাকবে না কেন?” কৃষ্ণনগরের তপন বলছিলেন, “ময়লা পরিষ্কারের চেয়ে মাটি কাটার কাজ অনেক সম্মানের।পুর শহর গুলিতে গাছ লাগানো কিম্বা পরিচর্যার মতো কাজের ক্ষেত্র করে কাজ দিলে ভাল হয়।”

ঘাটাল পুরসভার প্রশাসক বিভাস ঘোষ মানলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশের খুব সমস্যা। তবে আরবান ওয়েজেস এমপ্লয়মেন্ট প্রকল্পে কাজ চাইলে কাজ দেওয়ার কিম্বা কাজের পরিস্থিতি শহরে নেই।”ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল অবশ্য বলেন, “পুরসভার ওই প্রকল্পের মাধ্যমে ইচ্ছুক পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন