অ্যাপে ঘুগনির পাশাপাশি মিলবে এমন খাবারও। নিজস্ব চিত্র
শহর কলকাতায় বিভিন্ন ‘ফুড ডেলিভারি’ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ঘরে বসেই খাবার পাওয়া যায় খুব সহজেই। শহর থেকে দূরে মহিষাদলেও সম্প্রতি চালু হয়েছে একটি ‘ফুড ডেলিভারি’ অ্যাপ্লিকেশন। যার মাধ্যমে আপাতত চুটিয়ে ঘুগনি বিক্রি করছেন সেখানের ব্যবসায়ীরা।
খুব বেশি দিন নয়। এক দশক আগেও মহিষাদলের ঘুগনি পাড়ায় ভিড় জমাত আট থেকে আশির। কিন্তু আধুনিক প্যাটিস আর পিৎজার রমরমায় ‘ঘুগনি পট্টি’ সম্প্রতি খানিকটা সুনসান হতে শুরু করেছিল। ভাটা পড়েছিল তার জনপ্রিয়তায়।
দশকের পর দশক ধরে চলে আসা মহিষাদলের প্রসিদ্ধ ঘুগনি ‘শিল্পে’র জনপ্রিয়তা ধরে রাখার জন্য চালু হয়েছে ওই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। আর মাস তিনেকের মধ্যে প্রযুক্তির হাত ধরে সেখানের ঘুগনি বিক্রি অনেকেটা বেড়েছে বলে দাবি স্থানীয় বিক্রেতাদের।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্থানীয় সূত্রের খবর, মেচেদা থেকে হলদিয়া যাতায়াতের পথে মহিষাদলে নেমে নেমে কয়েক পা এগোলেই রয়েছে সারি সারি অস্থায়ী দোকান। সেখানে মহিষাদলের বহুল জনপ্রিয় ঘুগনি আর আলু- বেগুনি চপের মতো নানা সুস্বাদু খাবারের পদ বিক্রি হয়। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, মেচেদা-পাঁশকুড়ার চপের মতো মহিষাদলের ঘুগনিও যথেষ্ট জনপ্রিয়। তাই সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত মহিষাদল ব্লক ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নন্দকুমার, তমলুক, হলদিয়া থেকেও একটা সময় ওই সব দোকানগুলিতে ভিড় জমত। এখন সেই ভিড়ে পড়েছে ভাটা। স্থানীয় ব্যবসায়ী নিত্যানন্দ বেরা বলেন, ‘‘বেকারি আর রেস্তোরাঁর নানা রকমারি পদের আগমণে কয়েক বছর ধরে ঘুগনি বিক্রি কমে গিয়েছে। মন্দার বাজারে মাছি তাড়ানো ছাড়া কোনও কাজ ছিল না।’’
কিন্তু ইদানীং সুদিন ফিরে এসেছে বলে দাবি মহিষাদলের ঘুগনি পট্টির ব্যবসায়ীদের। এ জন্য প্রযুক্তির সাহায্য পাচ্ছেন তাঁরা। সাহেব সাঁতরা নামে মহিষাদলের গোপালপুরের এক যুবক ওই অ্যাপ্লিকেশনটি চালু করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের প্লে স্টোরে থেকে ওই অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। তারপর সেটি থেকে অর্ডার দিলেই বাড়িতে বসে পাওয়া যাবে ঘুগনি। এখন প্রায় হাজার দুয়েক লোক ওই অ্যাপের মাধ্যমে ঘুগনির আস্বাদ নিচ্ছেন।’’
কলেজ নির্ভর ওই এলাকায় ঘুগনি বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। ঘুগনি পাড়ার এক বিক্রেতা জানান, ‘‘অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি আমাদের কাছে ঘুগনির অর্ডার চলে আসে। আধ ঘণ্টার মধ্যে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি ঘুগনি। তার জন্য ক্রেতাকে অতিরিক্ত ২০ টাকা দিচে হচ্ছে।’’ আপাতত হলদিয়া এবং নন্দকুমার ব্লকের মানুষ এভাবে ঘুগনি অর্ডার দিতে পারছেন। তবে পরবর্তী ক্ষেত্রে ওই পরিধি বাড়িয়ে আরও অন্য ‘স্ট্রিট ফুড’, মিষ্টি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।