দলের কোন্দল মেটাতে অবশেষে জেলায় এলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য নেতৃত্ব। নেতৃত্বের বার্তা, দলের অন্দরে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। তবে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থেকে দল গড়তে হবে। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে ফরওয়ার্ড ব্লকের যে তিন সদস্যর দল এসেছিল তাতে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নরেন দে, আরও দুই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিশিকান্ত মেহতা এবং জয়ন্ত রায়। দুপুরে দলের জেলা কার্যালয়ে তাঁরা বৈঠক করেন। জেলা কমিটির সদস্যরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মাস দুয়েক পর দলের জেলা কাউন্সিল নির্বাচন হওয়ার কথা। এ দিন এ নিয়েও আলোচনা হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সর্বত্র ফরওয়ার্ড ব্লকের সে ভাবে সংগঠনই নেই। দলে অবশ্য কোন্দল রয়েছে। লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন সুকুমার ভুঁইয়া। ভোটে এ জেলাতেও বামেদের ভরাডুবি হয়। সেই দায় নিয়েই ইস্তফার কথা জানান সুকুমারবাবু। অবশ্য দলেরই এক সূত্র দাবি করে, জেলা সভাপতির সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছিল। সুকুমারবাবু এক সময়ে দলের জেলা সম্পাদক ছিলেন। পরে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে জেলা সভাপতি করা হয়। এই রদবদল মেনে নিতে পারেননি তিনি। ‘দূরত্ব’ তৈরি হয় এখান থেকেই। দলের রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য এ দিন মেদিনীপুরে এসে জানিয়ে দেন, সুকুমারবাবুর ইস্তফাপত্র দল গ্রহণ করেনি। জেলা কাউন্সিল নির্বাচনের আগে সদস্যপদ নবীকরণ করা হয়। বিষয়টি দেখার জন্য রাজ্য নেতৃত্ব একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন। জেলাস্তরের এই কমিটিতে সুকুমারবাবুকেও রাখা হয়েছে।
নিশিকান্ত মেহতা দলের তরফে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “এ দিন আমাদের দলের জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। সাংগঠনিক কিছু বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলতে হবে।” তাঁর কথায়, “জেলা সভাপতির পদত্যাগপত্র আমরা গ্রহণ করিনি। দু’মাস পর আমরা দলের জেলা কাউন্সিল করব। কেউ কেউ নেতৃত্বের পরিবর্তন চাইছেন। তবে এর একটা প্রক্রিয়া আছে। যা হবে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে হবে।” সুকুমারবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি আগের অবস্থানেই রয়েছেন। এখনও মত বদল করেননি। এ দিন জেলা কমিটির বৈঠক চলাকালীন একাধিক সদস্য নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন। দলের কাজ নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন।