দুষ্কৃতীদের ধরতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ। হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে আক্রমণে আহত হলেন এক মহিলা কনস্টেবল-সহ চার পুলিশ কর্মী। সোমবার রাতে চণ্ডীপুর থানার বৃন্দাবনপুর এলাকার বাসুদেবপুর গ্রামের ঘটনা। দুষ্কৃতীদের আক্রমণে চার জনের মধ্যে দু’জনের মাথায় আঘাত লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় আহতদের রাতেই চণ্ডীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ওই আক্রমণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক মহিলাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “অভিযুক্তদের ধরতে গেলে মূলত মহিলারা পুলিশ কর্মীদের বাধা দিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করে। এতে চারজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িত এক মহিলাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে চণ্ডীপুর বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সম্পাদক শুভেন্দু বেজ দোকান থেকে বাড়িতে ফেরার সময় এক দল দুষ্কৃতীরা তাঁর উপর হামলা করে। নিজের দোকান থেকে এক কিলোমিটার দূরে মোটরসাইকেলে করে স্থানীয় ওসমানপুর গ্রামে নিজের বাড়ি ঢোকার সময় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শুভেন্দুবাবুর পিঠে আঘাত করলে তিনি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। শুভেন্দুবাবুর কাছে থাকা লাইসেন্সড রিভলভার, টাকা, দোকানের চাবি-সহ ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। আহত শুভেন্দুবাবুকে চণ্ডীপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাতেই চণ্ডীপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে শুভেন্দুবাবুর উপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজন দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভেন্দুবাবুর উপর হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের ধরতে সোমবার রাত ৮টা নাগাদ চণ্ডীপুর থানা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে মহিলা পুলিশ-সহ পুলিশ বাহিনী বাসুদেবপুর গ্রামে এক অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু পুলিশ ওই বাড়িতে ঢুকতে গেলে ওই পরিবারের মহিলা-সহ এলাকার বেশ কয়েকজন মহিলা-পুরুষ মিলে লাঠিসোটা নিয়ে তাঁদের উপর আক্রমণ চালায়। লাঠির আঘাতে মাথায় চোট লেগে আহত হন হোমগার্ড বিনোদ গুড়িয়া, ভিলেজ পুলিশ জয়দেব মাইতি। হাত ভেঙে আহত হন মহিলা কনস্টেবল রিক্তানুর নেশা ও সাব-ইনস্পেক্টর লক্ষ্মীকান্ত রায়।
বাহিনীর অন্য পুলিশ কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে রাতেই চণ্ডীপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন পুলিশকে আক্রমণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দিকে, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক পুলিশ আধিকারিকের অষ্টম শ্রেণির স্কুল পড়ুয়ার ছেলের সঙ্গে গোলমালের অভিযোগে ময়নার দক্ষিণ হরকুলি গ্রামে গিয়ে এক স্কুল ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ময়না থানার সাব-ইন্সপেক্টর কাজল দোলইয়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার জেরে গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই পুলিশ আধিকারিককে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায় বলেও অভিযোগ। পরে ওই ভুল স্বীকার করলে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে ছাড়া পান ওই পুলিশ আধিকারিক। পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “স্কুল ছাত্রকে মারধর করা নিয়ে একটি গোলমালের ঘটনার খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”