দলছুটদের ঝোঁক বিজেপিতে, চরম সঙ্কটে পশ্চিমের ফব

একের পর এক নেতা-কর্মী দল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন। রাজনৈতিক স্বার্থে দলছুট ফব নেতা-কর্মীদের দলে নিচ্ছেনও বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ফব’র জেলা সভাপতি সুকুমার ভুঁইয়া, দলের যুব সংগঠন যুব লিগের জেলা সভাপতি আশিস চট্টোপাধ্যায়রা। আগামী ২৭ অগস্ট মেদিনীপুর শহরে বিজেপির সমাবেশে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের উপস্থিতিতে আরও কয়েকজন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা। আর এই পরিস্থিতিতে চরম সঙ্কটের মুখে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৭
Share:

একের পর এক নেতা-কর্মী দল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন। রাজনৈতিক স্বার্থে দলছুট ফব নেতা-কর্মীদের দলে নিচ্ছেনও বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ফব’র জেলা সভাপতি সুকুমার ভুঁইয়া, দলের যুব সংগঠন যুব লিগের জেলা সভাপতি আশিস চট্টোপাধ্যায়রা। আগামী ২৭ অগস্ট মেদিনীপুর শহরে বিজেপির সমাবেশে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের উপস্থিতিতে আরও কয়েকজন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা। আর এই পরিস্থিতিতে চরম সঙ্কটের মুখে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সংগঠন।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরে ফরওয়ার্ড ব্লকের সংগঠন কোনও দিনই তেমন মজবুত ছিল না। জেলার সর্বত্র সংগঠন তেমন মজবুত না হলেও গোষ্ঠী কোন্দলে ছেদ ছিল না। কোন্দলের জেরে বিড়ম্বনায়ও পড়েছে ফব-র রাজ্য নেতৃত্ব। লোকসভা ভোটের পর নির্বাচনী ভরাডুবির দায় নিয়ে দলের জেলা সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন সুকুমারবাবু। অবশ্য দলের এক সূত্রের দাবি, সুকুমারবাবুর সঙ্গে দলের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছিল। এক সময় তিনি দলের জেলা সম্পাদক ছিলেন। পরে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই রদবদল মেনে নিতে পারেননি তিনি।

লোকসভা ভোটের পর জেলায় এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। ২৭ অগস্ট দলের জেলা সমাবেশ করতে ফের তিনি জেলায় আসছেন। কর্মসূচি সফল করতে ইতিমধ্যে জেলায় প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। ফব-র সৌমেন চট্টোপাধ্যায়, নারায়ণ দাস প্রমুখের সেই দিনই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা। কেন দল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝোঁকা? ফরওয়ার্ড ব্লকের পদত্যাগী জেলা সভাপতি অধুনা বিজেপি নেতা সুকুমারবাবুর দাবি, “যে দলে শৃঙ্খলা নেই, সেই দলে থেকে লাভ কী! বিজেপি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। মানুষের জন্য কাজ করে। তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।” রাহুল সিংহ জানিয়েছেন, ওই দিন দলছুট ফব নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা মেদিনীপুর শহরে মিছিল করবেন। সুভাষনগর থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা। তারপর শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে সমাবেশস্থলে পৌঁছবে।

Advertisement

অবশ্য দলছুটদের নিয়ে বেশি ভাবতে নারাজ ফব-র জেলা নেতৃত্ব। একের পর এক নেতা-কর্মী দল ছাড়ার ফলে তো সংগঠন চরম সঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে? ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অশোক ভট্টাচার্যের জবাব, “কয়েকজন দল ছাড়লে দলের কোনও ক্ষতি হবে না! যাঁরা দল ছাড়ছেন, তাঁদের আদর্শ-বিচ্যুতি ঘটেছে। ওঁদের কয়েকজনকে আমরা আগেই দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি!” তবে দলের এক সূত্রে খবর, সোমবাই ফব-র জেলা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে সাংগঠনিক কিছু দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী অক্টোবর মাসে ফব’র জেলা সম্মেলন হওয়ার কথা। তার আগে দলে ‘ভাঙন-রোধে’ নেতৃত্ব কিছু পদক্ষেপও করবেন।

বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “সর্বত্রই দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রবণতা এখন চলছে। ২৭ অগস্ট ফরওয়ার্ড ব্লকের অনেক নেতা-কর্মী-সমর্থকও বিজেপিতে যোগ দেবেন।” এ ভাবে দলবদল চলতে থাকলে দলে বেনোজল ঢুকবে না তো? তুষারবাবুর জবাব, “বেনোজল ঢোকার প্রশ্নই নেই। অন্য দল ছেড়ে যাঁরা আসতে চাইছেন, আমরা তাঁদের ভাবমূর্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”

আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপির সংগঠন তেমন মজবুত ছিল না। কার্যত বিনা সংগঠনেই এ বার লোকসভায় এ জেলায় ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছে দল। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অবশ্য সংগঠন বাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য। পদের গুরুত্ব বিবেচনা করে অন্তরাদেবীকে বিজেপির জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্যও করা হয়েছে। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, গত তিন মাসে জেলায় বিজেপির প্রায় ১৩ হাজার প্রাথমিক সদস্য বেড়েছে। আরও প্রায় ৯ হাজার আবেদন এসে পড়ে রয়েছে। দলের জেলা নেতৃত্ব মনে করছেন, রাজ্য সভাপতির কর্মসূচি জেলা সংগঠনকে নতুন দিশাই দেখাবে। নেতা-কর্মীরা নতুন করে অক্সিজেন পাবেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন