দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট। মাঠে ময়দানে প্রচার তো চলছেই। সর্বত্র প্রার্থী না পৌঁছতে পারলেও দলীয় কর্মী সমর্থকেরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু শুধু কি এটাই যথেষ্ট?
হাতে মাত্র আর ১৪ দিন সময়। যা করার তার মধ্যেই করতে হবে। তাই শেষ মুহূর্তের প্রচার কৌশল ঠিক করতে এবার সমস্ত পেশার মানুষের পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। সেই লক্ষ্যে আজ, বুধবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে একটি পরামর্শ গ্রহণ কর্মসূচির আয়োজন করল মেদিনীপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেস।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কর্মসূচি অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, চিকিৎসক, ছাত্র, যুবক, ব্যবসায়ী, খেলোয়াড়, সঙ্গীত শিল্পী থেকে শুরু করে সমস্ত জগতের মানুষ। দলীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি সভায় হাজির থাকবেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সন্ধ্যা রায়ও। শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আশিস চক্রবর্তীর কথায়, “এটা অন্য ধরনের কর্মসূচি। সাধারণ প্রচারের ক্ষেত্রে নেতা-প্রার্থী বক্তব্য পেশ করেন। শোনেন সাধারণ মানুষ। এখানে দলীয় নেতৃত্ব ও প্রার্থী মিলে সকল পেশার মানুষের কথা শুনব। আর তাঁদের পরামর্শ মতো কাজ করব।”
হঠাৎ এই ধরনের কর্মসূচি কেন? আশিসবাবুর কথায়, “আমরা তো টানা প্রচার করছি। সেখানে আমাদের কথা বলছি। কিন্তু সেই বার্তা সঠিক ভাবে মানুষের কাছে যাচ্ছে কিনা, আমাদের আর কিছু করণীয় রয়েছে কিনা, তা জানতেই এই উদ্যোগ। আমাদের লক্ষ্য, সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জেতানো। সব পেশার মানুষ ছাড়া তা সম্ভব নয়।”
আজ, পশ্চিম মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিনটি জনসভা রয়েছে। একটি হবে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সন্ধ্যা রায়ের সমর্থনে খাকুড়দাতে। বাকি দু’টি সভা হবে ঘাটালের তারকা প্রার্থী দেবের সমর্থনে। একটি হবে সবংয়ের তেমাথানিতে। অন্যটি ঘাটালে। যা নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব খুবই ব্যস্ত। তারই মাঝে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগী হয়েছেন দলের নেতারা। বিকেলের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর সভা শেষ হয়ে যাবে। তাই সন্ধ্যায় এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যত ভোট এগিয়ে আসছে ততই নানা জটিলতাও দেখা দিচ্ছে। কারণ, শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই কেন্দ্রের প্রার্থী সন্ধ্যা রায় অন্যান্য প্রার্থীদের মতো এলাকায় প্রচারে বেরোতে পারছেন না। ফলে সব এলাকার নেতা-কর্মীরা প্রার্থীকে না পেয়ে কিছুটা ক্ষুব্ধ। যা নিয়ে দলের অন্দরেও চূড়ান্ত ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাই সমাজের বিশিষ্টজনদের পরামর্শই এখন দলীয় নেতাদের ভরসা।
এ দিনের সভায় থাকার কথা রয়েছে দলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, পুরসভার পুরপ্রধান প্রণব বসু সহ দলীয় নেতাদেরও। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছ থেকে যে পরামর্শ উঠে আসবে আগামী দিনে সেভাবেই প্রচার চালানো হবে। এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীদেরও। দলীয় নেতৃত্বের আশা, এই ধরনের কমসূচি দলকে সমৃদ্ধ করবে। প্রার্থীর জয়ের পথও সুগম করবে। লোকসভা নির্বাচনের শেষ লগ্নে পৌঁছে এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হবে তা অবশ্য সময়ই বলবে।