ক’দিন পরেই পুরভোট। তার আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুর পুর-এলাকার অন্তর্গত বিদ্যাসাগর সমবায়ের ভোটে ভরাডুবি হল শাসক দলের। রবিবার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, ৯টি আসনের সবক’টিতেই বিজেপি সমর্থিতেরা বিপুল ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের।
গত লোকসভা ভোটের পর থেকেই রাজ্যে শক্তি বাড়াচ্ছে বিজেপি। বহু দিন পরে উপ-নির্বাচনে জিতে বিধানসভায় প্রতিনিধি পাঠিয়েছে তারা। সাম্প্রতিক ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও কয়েকটি কলেজে ছাত্র সংসদ দখল করেছে এবিভিপি। পশ্চিম মেদিনীপুরেও সংগঠন ঢেলে সাজছে বিজেপি।
জঙ্গলমহলের এই জেলায় সমবায়ে বিজেপি-র জয় এই প্রথম। কোন সমীকরণে এই সাফল্য এল?
রামজীবনপুরের ওই সমবায় এক সময় বামেদের দখলে ছিল। পরে তৃণমূল-বিজেপি ও কংগ্রেসের মহাজোট সমবায়ের দখল নেয়। এ বার অবশ্য দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। সিপিএম, কংগ্রেসের কোনও প্রার্থী ছিল না। বিজেপির একটি সূত্রে খবর, তার ফলে তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ হয়নি। সবটাই তাদের পক্ষে এসেছে। তা ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার মতো এখানেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। পুরভোটের প্রার্থী বাছাই নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে আকচা-আকচি। পুরসভা পরিচালিত হাসপাতাল নিয়ে পুরপ্রধান শিবরাম দাসের বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত হয়েছে।
এ সবই গিয়েছে বিজেপির অনুকূলে। সমবায়ে জয় নিয়ে দলের বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এখন বিজেপিকেই ভোট দেবেন।” একই মত বিজেপি-র জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের। আর রামজীবন পুরসভায় বিজেপি কাউন্সিলর গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সমবায়ের জয়ের ধারা পুরভোটেও বজায় থাকবে। কারণ, তৃণমূলের বিকল্প শক্তি বিজেপি-ই।” এ দিন রামজীবনপুরে বিজেপি বিজয় মিছিলও করে।
পুরভোটের আগে সমবায়ের হারে তৃণমূলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। দলের একটি সূত্রের খবর, এ দিন ফল প্রকাশের পরেই দলের স্থানীয় নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। ক্ষুব্ধ নীচুতলার কর্মীরাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মীর কথায়, “নেতারা বিরোধ না মেটালে বিজেপির কাছে এ ভাবেই মুখ পুড়বে!”