মানেকসিয়ার গেটে বিক্ষোভ। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।
বকেয়া বেতন এবং কারখানা খোলার দাবিতে মানেকসিয়া অ্যালুমিনিয়াম ইউনিটের ঠিকাকর্মীরা ওই কারখানারই চালু থাকা স্টিল ইউনিটের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন। বিক্ষোভের জেরে গত শুক্রবার থেকে স্টিল ইউনিটের ঠিকাকর্মীরা কারখানায় ঢুকতে পারেননি। সোমবার মালিকপক্ষের প্রতিনিধি এসে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অ্যালুমিনিয়াম ইউনিটের কর্মীদের বেতন মেটানো এবং শীঘ্রই কারখানা খোলার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে।
এ দিন দুপুরে স্টিল ইউনিটের সামনে ঠিকাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মানেকসিয়ার গ্রুপ পার্সোনেল ম্যানেজার অনুপম মিত্র। সেখানে তিনি বলেন, “কারখানা শীঘ্রই খুলবে। তা ছাড়া আগামী তিন চার দিনের মধ্যে অক্টোবর মাসের বেতন মেটানো হবে। নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসের বেতন দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে, জানিয়েছেন অনুপমবাবু।
হলদিয়ার ঝিকুরখালিতে মানেকসিয়ার একটি অ্যালুমিনিয়াম ও একটি স্টিল ইউনিট রয়েছে। স্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের জেরে গত ৩ নভেম্বর মানেকসিয়ার অ্যালুমিনিয়াম ইউনিটে ‘সাসপেনসন অব ওয়ার্কের’ নোটিস ঝোলায় কর্তৃপক্ষ। যদিও স্টিল ইউনিটটি চালু রয়েছে। অ্যালুমিনিয়াম ইউনিটের জটিলতা কাটাতে হলদিয়ায় উপশ্রম কমিশনার তিন বার বৈঠকে ডাকেন। কিন্তু তিন বারই মালিকপক্ষ বৈঠকে না দিয়ে চিঠি পাঠান। অ্যালুমিনিয়াম ইউনিট বন্ধ থাকায় প্রায় সাড়ে তিনশো স্থায়ী ও ঠিকাকর্মীরা সমস্যায় পড়েন। তাঁরা বার বার কারখানা চালু করার দাবি জানালেও এখনও তা চালু হয়নি।
মানেকসিয়া স্টিল ইউনিটের সামনে গত তিন দিন ধরে অ্যালুমিনিয়াম ইউনিটের ঠিকাকর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকাও লাগানো ছিল। যদিও বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র তরফে নয়, ইউনিয়ন গত ভাবে আন্দোলন করছেন। বিক্ষোভরত ঠিকাকর্মী রাজেশ্বর দাস, উৎপল পাত্রেরা বলেন, “মালিকপক্ষ অক্টোবর পর্যন্ত বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আমরা ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” বিষয়টি নিয়ে মালিকপক্ষ আজ, মঙ্গলবার ফের আলোচনার আশ্বাস দিয়েছে বলে দাবি তাঁদের। ওই কারখানার আইএনটিটিইউসি-র ঠিকাকর্মী ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি তথা হলদিয়ার শ্রমিক নেতা মিলন মণ্ডল দ্রুত কারখানা খোলার ব্যাপারে আশাবাদী।
এ দিন মানেকসিয়ার গ্রুপ পার্সোনেল ম্যানেজার ঠিকাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের কারও জন্য বা রাজনৈতিক কারণে কারখানা বন্ধ হয়নি। সংস্থার আর্থিক সমস্যা এবং অ্যালুমিনিয়াম শিল্পে বিশ্বজুড়ে মন্দার কারণে কারখানা বন্ধ করতে হয়েছে।” আগে রাজনৈতিক চাপের কথা বলে এখন আর্থিক সমস্যার বিষয়টিতে জোর দিচ্ছেন কেন?
অনুপমবাবুর জবাব, “অন্য রাজ্যে রাজনৈতিক চাপ আরও বেশি থাকে। এখন পুরানো কথা বলতে চাই না। কারখানা চালু করতে চাই।” শ্রমিক ইউনিয়ন এ ব্যাপারে সাহায্য করছে বলেও তিনি জানান।