‘মিতাকে কেউ মারেনি’

প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মৃতার ভাই খোকন দাস বলেন, ‘‘আমার বোনকে খুন করা হল। এখন বিচারের জন্য আমাদেরই দোরে দোরে ঘুরতে হচ্ছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২০
Share:

মিতা দাস

মিতা দাসের মৃত্যু কী ভাবে হয়েছিল, প্রায় দেড় বছর পরে ফের সেই প্রশ্ন তুলে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সরব হলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী মিতার বন্ধুরা।

Advertisement

উলুবেড়িয়ার কুশবেড়িয়ার বাসিন্দা রানা মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল যাদবপুরের বাংলা বিভাগের মেধাবী ছাত্রী মিতা দাসের। ২০১৬-র ১১ অক্টোবর ভোর পাঁচটা নাগাদ ফোন করে শ্বশুরবাড়ি থেকে জানানো হয়, বছর চব্বিশের মিতা আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফুলেশ্বরের হাসপাতালে মিতার দাদা খোকন দাস পৌঁছে দেখেছিলেন, মৃতা বোনের নাকে রক্ত। কপাল ফুলে উঠেছে। যার প্রেক্ষিতে পরিবারের অভিযোগ ছিল, মিতাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানায় হাসপাতালও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি।

গত ১৬ মাস মিতার পরিবার কী অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে, তা জানিয়ে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন তাঁর বন্ধুরা। অভিযুক্তদের জামিন পাওয়া, তদন্তে অসঙ্গতি ও সদুত্তর না পাওয়া কিছু প্রশ্ন সামনে এনে ‘ভালবাসার দিনে’ সেই পোস্টের শিরোনাম, ‘মিতাকে কেউ মারেনি’! বুধবার তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মৃতার ভাই খোকন দাস বলেন, ‘‘আমার বোনকে খুন করা হল। এখন বিচারের জন্য আমাদেরই দোরে দোরে ঘুরতে হচ্ছে।’’

Advertisement

অসন্তোষের প্রেক্ষিত ব্যাখ্যা করে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে আশ্বাস দিয়েছিলেন, অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি হবে। অথচ স্বামী-সহ সকলেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। ভাইয়ের বক্তব্য, ‘‘চার্জশিটে আত্মহত্যায় প্ররোচনা বা তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারা নেই। ধারা যা দেওয়া হয়েছে, তাতে অভিযোগ মান্যতা পায়নি। যে ঘরে বোনের দেহ মেলে, সেটি ১৭ অক্টোবর সিল করা হয়। এতদিনে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা কি সহজ নয়?’’ খোকনের দাবি, ময়না-তদন্তের রিপোর্টেও বিস্তর গলদ আছে। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘মাথার পিছনে আঘাতের যে চিহ্ন দেখেছিলাম, তার উল্লেখ রিপোর্টে নেই। ভিডিও অটোপসি নট ডান লেখা আছে। ময়না-তদন্তে বোনের পোশাকের রং এক রকম বলা হয়েছে, চার্জশিটে আর এক রকম। হাসপাতাল জানিয়েছিল, ভোর পাঁচটায় বোনের দেহ আনা হয়েছিল। চার্জশিটে রয়েছে, সকাল ৬টা। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে বোনের মৃত্যুর সময় ও তারিখেরই বা উল্লেখ নেই কেন?’’ সব প্রশ্নের উত্তর পেতে গত ১৬ মাসে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর, ভবানী ভবন, হাওড়ায় সিআইডি-র কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর দফতর, নারীকল্যাণ মন্ত্রক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে দরবার করেছেন মৃতার ভাই।

আরও পড়ুন: ধর্মতলায় সভা ধর্ম বদলের, সঙ্গে গুন্ডামি

এ নিয়েই ফেসবুকে লিখেছেন মিতার সহপাঠী শারদ্বত মান্না। তিনি বলেন, ‘‘মিতার সঙ্গে যা-ই ঘটে থাকুক, তা সামনে আসুক। এটুকুই চাই।’’ মিতার শ্বশুরবাড়িতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সিআইডি-র এক কর্তা জানান, বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। চার্জশিট পেশ হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement