সারদা ও রোজভ্যালি নিয়ে সিবিআইতদন্ত চলছেই। এ বার লগ্নি সংস্থানিয়ে তদন্তের পরিধি আরও বাড়িয়ে এমপিএসকেও তার আওতায় নিয়ে এল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তদন্তকারীদের অভিযোগ, ধারে এবং ভারে এই সংস্থাও সারদা বা রোজভ্যালির চেয়ে কম যায় না। মঙ্গলবার বিধাননগর আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, কোনও অনুমতি ছাড়াই অর্থলগ্নি সংস্থা এমপিএস বাজার থেকে আড়াই হাজারকোটি টাকা তুলেছে। এই প্রতারণার ষড়যন্ত্রে কোনও প্রভাবশালীজড়িত কি না, তা জানতে এ দিন এমপিএস সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রমথনাথ মান্নাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে প্রমথনাথ এত দিন জেল হেফাজতে ছিলেন।
সিবিআইয়ের মুখপাত্র কাঞ্চন প্রসাদ এ দিন জানান, ‘এমপিএস গ্রিনারি ডেভেলপারস প্রাইভেট লিমিটেড’ বাজার থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ করেছে। প্রমথনাথ মান্না ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর। সিবিআইয়ের অভিযোগ, আমানতকারীদের চড়া সুদে টাকা ফেরত দেওয়ার টোপ দিয়ে বাজার থেকে ওই টাকা তোলা হয়। কিন্তু বাজার থেকে টাকা তোলার বৈধ অনুমতি সংস্থার কাছে ছিল না।
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরমাসে আমানতকারীদের অভিযোগ পেয়ে রাজ্য সরকারের গড়া শ্যামল সেন কমিশন এমপিএসকে বাজার থেকে টাকা না তোলার জন্য নির্দেশ দেয়। এর পরে কমিশনের বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রমথনাথবাবু। তত দিনে অবশ্য রাজ্যের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরমধ্যে আবার উধাও হয়ে গিয়েছিলেন প্রমথমাথ। পুলিশ তল্লাশিচালিয়েও তাঁকে খুঁজে পায়নি বলে দাবি করেছিল।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রমথনাথবাবু এবং তাঁর সংস্থার অন্য অধিকর্তা প্রবীর চন্দ্র নিজেদের পরিচয় গোপন করে হাজির হয়েছিলেন শ্যামলসেন কমিশনের অফিসে। কিন্তু ওই সময়ে আমানতকারীদের কয়েক জন তাঁকে চিনে ফেলেন। তাঁরা শ্যামল সেনকে বিষয়টি জানান। শ্যামলবাবু হেয়ার স্ট্রিট থানায় এই খবর জানালে পুলিশ এসে কমিশনের অফিস থেকে ওই দুই অধিকর্তাকে গ্রেফতার করেছিল। এর পর থেকে এমপিএস সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতেথাকে রাজ্য পুলিশই। কিছু দিন রাজ্য পুলিশের হেফাজতে থাকার পর প্রমথনাথকে পাঠানো হয় জেল হেফাজতে।
এ দিন প্রমথনাথকে দশ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আর্জি জানায় সিবিআই। সেই আর্জি মঞ্জুর হয়েছে। ২৬ মার্চ পর্যন্ত তিনি সিবিআই হেফাজতে থাকবেন।