Woman

ট্রেন লেট, অসুস্থ শিশুর মৃত্যু, আত্মঘাতী মা

সকালে গঙ্গা থেকে উদ্ধার হল পূজার দেহ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, সন্তান শোকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণী।

Advertisement

দেবাশিস দাস

হাওড়া শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ১৬:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

জন্মের কিছু দিন পর থেকেই যক্ষা রোগে আক্রান্ত নয় মাসের ছেলে। স্থানীয় চিকিৎসকরা তেমন আশার আলোও দেখাতে পারেননি। আর তাই উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় এনে তার চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হাওড়ার পূজা সিংহ। কিন্তু, কলকাতায় আনার পথে ট্রেনেই মৃত্যু হয় শিশুটির।

Advertisement

পরিবার সূত্রে খবর, ট্রেনে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল শিশুটি। তাদের দাবি, ট্রেন বহু ক্ষণ দেরি করায় ঠিক সময় তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। শুক্রবার এই ঘটনার পর থেকেই নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলেন ২৫ বছরের পূজা। আর শনিবার সকালে গঙ্গা থেকে উদ্ধার হল পূজার দেহ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, সন্তান শোকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণী।

পুলিশ সূত্রে খবর, বছর সাতেক আগে উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় বিয়ে হয়েছিল হাওড়ার বনবিহারী রোডের বাসিন্দা পূজার। ওই তরুণী মাস নয়েক আগে যমজ সন্তানের জন্ম দেন। দুটিই ছেলে। কিন্তু, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাদের মধ্যে এক জন জন্মের ২০ দিনের মধ্যেই মারা যায়। তার কিছুদিনের মধ্যে অন্য শিশুটি যক্ষায় আক্রান্ত হয়। এত দিন বালিয়াতেই তার চিকিৎসা চলছিল। যমজ সন্তান ছাড়াও পাঁচ এবং সাড়ে তিন বছরের দু’টি ছেলে রয়েছে ওই তরুণীর।

Advertisement

আরও পড়ুন: অমিতাভের মৃত্যু নিয়ে মিলছে না অনেক জবাব

পূজার পরিবার সূত্রে খবর, এত দিন চিকিৎসা চললেও তেমন কোনও উন্নতি হয়নি ন’মাসের শিশুটির। এর পরই চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো, কলকাতায় এনে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো গত বৃহস্পতিবার পূজা এবং তাঁর শ্বশুর হাওড়াগামী বিভূতি এক্সপ্রেসে ওঠেন।

পরিবারের অভিযোগ, ট্রেনটি শুক্রবার সকাল ৭টায় হাওড়া পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু, তার পরিবর্তে বেলা প্রায় একটা নাগাদ হাওড়া পৌঁছয়। পূজার পরিবার সূত্রে খবর, ট্রেনের মধ্যেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল শিশুটি। হাওড়ায় নেমে শিশুটিকে জৈন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটি কিছু ক্ষণ আগেই মারা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আকাশ সাফ হয়ে রোদ উঠতে পারে

পরিবার সূত্রে খবর, এ দিন ভোর থেকেই পূজাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। আত্মীয়-স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর খোঁজ খবর শুরু করেন। সকাল সাতটা নাগাদ স্থানীয়রাই গঙ্গায় পূজার দেহ ভেসে উঠতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, সন্তান হারানোর শোক মেনে নিতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন পূজা।

পর পর দু’দিন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় কার্যত বাকরুদ্ধ পূজার গোটা পরিবার। তাদের কেবল একটাই কথা, ট্রেনটা যদি ঠিক সময় পৌঁছত...।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন