Murshidabad unrest

পর্যাপ্ত পুলিশ থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনা যেত মুর্শিদাবাদের অশান্তি, নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য? প্রশ্ন হাই কোর্টের

গত মাসে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ থেকে অশান্তি ছড়িয়েছিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ-সহ বেশ কিছু অঞ্চলে। তাতে তিন জনের মৃত্যুও হয়। হাই কোর্টে ওই সংক্রান্ত মামলা চলছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৫ ১৮:২৮
Share:

মুর্শিদাবাদের অশান্তির মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মুর্শিদাবাদে পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। সেই কারণেই সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, রাজ্যের প্রত্যেক জেলায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম আছে। অশান্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য তা পর্যাপ্ত নয়। সর্বত্র পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করার সময় এসেছে। মুর্শিদাবাদে ক্ষতিগ্রস্তদের যে ক্ষতিপূরণ রাজ্য সরকার দিয়েছে, তা নিয়ম মেনে দেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত।

Advertisement

গত মাসে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ থেকে অশান্তি ছড়িয়েছিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ-সহ বেশ কিছু অঞ্চলে। অশান্তিতে মৃত্যু হয় এক পিতা ও তাঁর পুত্র-সহ তিন জনের। হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, প্রতি জেলায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম। মুর্শিদাবাদেও পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী নেই। যদি থাকতেন, তবে হয়তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হত। এখন সময় এসেছে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী নিয়োগ করার।

বিচারপতির কথা শুনে কল্যাণ জানান, শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, সারা দেশেই বাহিনী কম আছে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ টেনে কল্যাণ বলেন, পর্যাপ্ত বাহিনী থাকলে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা ঘটত না। বিচারপতি কল্যাণের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েও জানান, আপাতত এই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি চিন্তা করছেন। প্রতিটি জায়গায় ন্যূনতম বাহিনী রাখতে হবে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন বলে জানান কল্যাণ। এর পরেই বিচারপতি ক্ষতিপূরণের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের যে প্রকল্প আছে, তা মেনে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য? কারণ, আপনারা যেটাকে পর্যাপ্ত বলে মনে করছেন, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে পর্যাপ্ত বলে না-ও মনে হতে পারে।’’

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানানো হয়, প্রয়োজনে মুর্শিদাবাদের অশান্তির তদন্তভার নিতে প্রস্তুত জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। আদালত নির্দেশ দিলেই এনআইএ তদন্ত শুরু করতে পারে। কেন্দ্র আরও জানায়, গত ১৮ এপ্রিল রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং ডিজিকে অশান্তি হতে পারে বলে জানিয়ে সাবধান করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, রাজ্যের কমপক্ষে ১৫টি জায়গায় অশান্তি হতে পারে। কেন্দ্রের সম্পত্তি আক্রমণ করা হতে পারে। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে হাই কোর্ট জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের সংবেদনশীল এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। আগামী ৩১ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement