Advertisement
E-Paper

‘মুর্শিদাবাদে ছক কষে অশান্তি, নেপথ্যে দু’-তিন জন’! শীঘ্রই সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে আনবেন বলে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতার

মুর্শিদাবাদে চক্রান্ত করে অশান্তি করা হয়েছিল। নেপথ্যে আছেন দু’-তিন জন। এ বিষয়ে খবরাখবর নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মমতা। শীঘ্রই সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে আনবেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৫ ১৬:৪০
Mamata Banerjee says she is crosschecking Murshidabad incident and will reveal truth soon

সোমবার বহরমপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

মুর্শিদাবাদে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে কী ভাবে অশান্তি হল? কেন পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে গেল? কারা এর নেপথ্যে? সমস্তটাই যাচাই করে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খবরাখবর নিচ্ছেন। শীঘ্রই এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ্যে আনা হবে। সোমবার বহরমপুর থেকে এমনটাই জানালেন তিনি। যাঁরা দাঙ্গা করছেন, তাঁদের ‘বাংলার শত্রু’ বলে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তোপ দেগেছেন বিরোধীদের বিরুদ্ধেও।

দু’দিনের মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার দুপুরে বহরমপুরে পৌঁছোন তিনি। মঙ্গলবার সেখান থেকে ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জ, সুতির মতো উপদ্রুত এলাকায় তাঁর যাওয়ার কথা। তার আগে বহরমপুর থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমি কোনও সম্প্রদায়কে দোষ দেব না। কিছু মানুষ ধর্মীয় নেতা সেজেছেন। ধর্মের নামে তাঁরা বিধর্মের কথা বলেন। পালে বাঘ না পড়লেও বাঘ বাঘ বলে চিৎকার করেন। তাঁরাই অশান্তি করেন। তাঁরা বাংলার শত্রু।’’

মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ একটা সময়ে বাংলার রাজধানী ছিল। এখানকার দুটো ওয়ার্ডে গোলমাল হয়েছে। দু’-তিন জন লোক এই গোলমাল পাকাচ্ছে। কারা করিয়েছে, কী ভাবে করিয়েছে, আমি ক্রসচেক করছি। কিছু সংবাদমাধ্যমের ভূমিকাতেও বিভাজন তৈরি হচ্ছে। কিছুটা বাকি আছে। পুরো তথ্য পেয়ে গেলে আমি তা প্রকাশ করব।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘আমি যখন রাজনীতি করি বা কোনও চেয়ারে থাকি, আমার কাছে সব ধর্ম সমান, সকলে সমান। আমি চাই না, বাংলায় কোনও সম্প্রদায় আক্রান্ত হোক। মুর্শিদাবাদে তো চক্রান্ত করে অশান্তি হয়েছে।’’

মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং জাতীয় মহিলা কমিশন। মমতা তাদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ঘটনা যে দিন হল, তার পরের দিনই মানবাধিকার কমিশন চলে এল! কই মণিপুরে তো যায়নি! উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, বিহারে তো যায়নি! এখানে হঠাৎ কী হল? পরিকল্পনা করে এটা করা হয়েছে। একটা সম্প্রদায় আর একটা সম্প্রদায়ের উপর ঝাঁপিয়েছে। উস্কানি দেওয়া হয়েছে। বাংলা এটা সহ্য করবে না।’’

মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে নিহত হয়েছেন ধুলিয়ানের হরগোবিন্দ দাস এবং তাঁর পুত্র চন্দন দাস। ঘটনার পরেই বিজেপির প্রতিনিধিদল শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে। তাদের হাতে ২০ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারও নিহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু পরিবার তা নিতে অস্বীকার করে। মুখ্যমন্ত্রী আগে মুর্শিদাবাদে যাননি। তিনি জানিয়েছিলেন, অশান্তির আবহে বাইরে থেকে সেখানে কারও যাওয়া উচিত নয়। পরে দিঘায় জগন্নাথধামের অনুষ্ঠান মিটিয়ে তিনি মুর্শিদাবাদে গিয়েছেন। তবে নিহতদের পরিবারের সদস্যেরা এখন মুর্শিদাবাদে নেই। তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে কলকাতায় এসেছেন। মমতা বলেন, ‘‘আমি ১০ লাখ করে দুটো পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে আসতাম। আপনারা তাদের লুকিয়ে নিয়ে গেলেন কেন? এখন তাদের দিয়ে আমাকে গালাগাল দেওয়াচ্ছেন। আপনারা অশান্তি করবেন আর গালাগাল আমি শুনব? কেন বিএসএফ সে দিন গুলি চালাল? আমি মনে করি, গুলি না-চালালে পরের দিন ওই ঘটনা ঘটত না।’’

মুর্শিদাবাদের স্থানীয় সংগঠনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘‘এখানে অন্য সংগঠন আছে। তার নেতা আছেন। তিনি উস্কানি দেন। অশান্তির সময়ে ৪৮ ঘণ্টা তিনি আলো নিবিয়ে রেখেছিলেন। এটা করা যায় না। কী লুকোতে চেয়েছিলেন?’’ সাম্প্রদায়িক অশান্তি না করে দেশের নিরাপত্তার দিকে নজর দিক বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার, চান মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আপনারা সীমান্তের বিষয়টা দেখুন। দেশকে বাঁচান। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, সেই পরিবারগুলোকে বিচার দিন। এটা নিয়ে রাজনীতি করবেন না। আমি তা সহ্য করব না। সাম্প্রদায়িক অশান্তি নিয়ে ঝামেলা না-করে সীমান্তে নজর দিন। আরও দায়িত্বশীল হোন। চেয়ারে থাকলে মানুষে মানুষে বিভাজন করা যায় না।’’

CM Mamata Banerjee Murshidabad Unrest Murshidabad protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy