দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও রাজনীতি নয়। তৃণমূল এ সব বিষয়ে ভারত সরকারের পাশেই আছে এবং থাকবে। পহেলগাঁও নিয়ে আরও এক বার নিজের ও দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে ডুমুরজলায় তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর দিল্লিতে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে তৃণমূলের তরফে ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বৈঠকে জানিয়ে এসেছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে তৃণমূল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে। এর আগে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে দলের নেতামন্ত্রীদের ‘আলটপকা’ মন্তব্য না করার নির্দেশও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার মুর্শিদাবাদে যাওয়ার জন্য কপ্টারে চড়ার আগে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ‘‘দেশে এখন যা চলছে, জাতীয় নিরাপত্তার যে ব্যাপার, আমরা বলেই দিয়েছি, তাতে আমাদের দল কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকবে। কখনও ডিভাইড অ্যান্ড রুল করব না।’’ অর্থাৎ, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতি করতে চায় না তৃণমূল।
আরও পড়ুন:
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক বাসিন্দার নাম ছিল। ওই ঘটনার পরের দিনই মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছিলেন মমতা। সূত্রের খবর, সেখানে সতীর্থদের সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘দেশের অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় এটা। তাই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে আবেগে কোনও মন্তব্য করবেন না।’’ এর পর প্রকাশ্যেও পহেলগাঁও নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। বলেন, ‘‘আমি ভেবে পাচ্ছি না, এত ক্ষণ ধরে বেছে বেছে মারল! যেগুলো আমরা শুনতে পাচ্ছি, দেখতে পাচ্ছি...। ওখানে তো অনেক আর্মি (সেনা) ছিল। এমনিতে তো সীমান্ত এলাকা। স্পর্শকাতর এলাকা। যা-ই হোক, এ সব নিয়ে এখন কথা বলব না।’’
অভিযোগ, পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ধর্মপরিচয় জিজ্ঞাসা করে বেছে বেছে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ইতিমধ্যে একাধিক পদক্ষেপ করেছে নয়াদিল্লি। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানিদের ভিসাও বাতিল করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আপাতত বন্ধ। আকাশসীমাও বন্ধ করা হয়েছে দুই তরফে। পাকিস্তান প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, তারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। সংঘাতের আবহে আমেরিকা, রাশিয়া, চিন এবং ইউরোপের দেশগুলি ভারত-পাক উত্তেজনা কূটনীতির মাধ্যমে প্রশমনের বার্তা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় স্বার্থে কেন্দ্রকে সহযোগিতা করার কথা জানালেন মমতা।