West Bengal News

ঘুমন্ত শিশুর পাশেই রক্তাক্ত দেহ বাবা-মা’র, বাগডোগরায় চাঞ্চল্য

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ১৪:৫৩
Share:

এই বাড়িতেই খুন হয়েছেন অজয় ও মীরা খুশওয়া। নিজস্ব চিত্র।

পাশাপাশি দুটো ঘর। তার একটিতে পড়ে রয়েছে বাড়ির মালিকের ক্ষতবিক্ষত দেহ। অন্য ঘরে বিছানা থেকে উদ্ধার হয় তাঁর স্ত্রীর দেহ। বাগডোগরার প্রধাননগরের দম্পতি খুনের এই ঘটনাই এখন ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশকে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ওই দম্পতির নাম অজয় খুশওয়াহা (৩৫) ও মীনা খুশওয়াহা (৩২)।

Advertisement

অজয়ের একটি ব্যবসা রয়েছে। মূলত ক্যাটারিংয়ে জন্য কাজের লোকের কনট্র্যাক্ট নিতেন তিনি। খুব সম্প্রতি অজয় একটি বাড়ি করেছিলেন। সেখানেই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকতেন তিনি। তাঁর সাড়ে চার বছরের একটি ছেলে এবং দু’মাসের একটি মেয়ে রয়েছে।

নিজের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অন্য একটি বাড়িতে তাঁর ব্যবসার যাবতীয় কাজকর্ম চলত। ওই বাড়িতেই এক সময় ভাড়া থাকতেন অজয়। সেখানে আরও ভাড়াটে রয়েছে। অজয় ওই বাড়ি ছেড়ে চলে এলেও ব্যবসার যাবতীয় কাজকর্ম ওখান থেকেই সামলাতেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: মমতার অনুকূলে রান্নাঘরই সেই মেয়ের পড়ার ঘর

কাজ শেষে প্রতি দিনই ক্যাটারিংয়ের কর্মীরা তাঁদের মালিকের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। শনিবার রাতেও ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন এক কর্মী। তাঁর দাবি, অন্য দিন বাড়ির বাইরে থেকে ডাকলে মালিক বা তাঁর স্ত্রী এসে দরজা খুলে দেন। কিন্তু ওই রাতে কারও সাড়া পাননি। শুধু তাই নয়, অন্য দিন দরজা বন্ধ থাকলেও ওই দিন কিন্তু দরজা হাট করে খোলা ছিল। তিনি সোজা ঘরে ঢুকে পড়েন। ঢুকেই আঁতকে ওঠেন। সামনের ঘরেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন অজয়। পাশের ঘরে যেতেই দেখেন অজয়ের স্ত্রী মীনা বিছানার উপর পড়ে রয়েছেন। চার দিকে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাশেই ঘুমিয়ে রয়েছে তাঁর দুই সন্তান। সঙ্গে সঙ্গে পাড়াপড়শি ও পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানান তিনি। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে, দম্পতির মাথায় ও শরীরে কোনও ভারি ধারাল অস্ত্রজাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।

দম্পতি খুনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠে এসেছে। রহস্যও দানা বাঁধছে। দুটো মানুষ খুন হয়ে গেলেন অথচ আশপাশের কেউ টের পেল না কেন? আততায়ী যখন আক্রমণ করে সেই সময় ওই দম্পতি কোনও আওয়াজ করলেন না কেন বা সাহায্যের জন্য চিৎকার করেননি কেন? মীরাদেবী বিছানাতেই খুন হলেন অথচ তাঁর ছেলে টের পেল না!

আরও পড়ুন: সামাজিক সংগঠনের আড়ালেও রাজনীতি

পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের জিনিসপত্র ওলটপালট থাকলেও, খোয়া যায়নি কিছুই। তা হলে কি পরিচিত কেউ খুন করেছে, এমন সন্দেহও উঠে আসছে। যে কর্মী অজয়কে ডাকতে গিয়েছিলেন, তিনি জানান, অন্য দিন ঘরের দরজা বন্ধই থাকে। ডাকার পর খোলা হয়। এ ক্ষেত্রে কি পরিচিত কেউ ডাকার পরই দরজাটা খুলে দিয়েছিলেন দম্পতি?

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অজয় আগে যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেখানে নীতু রাই নামে এক ভাড়াটিয়ার সঙ্গে মাসখানেক আগে জল নিয়ে বচসা হয়েছিল। নীতু নাকি সে সময় অজয়কে হুমকি দিয়েছিল খুন করার। এ নিয়ে একটা সালিশি সভারও আয়োজন করা হয়েছিল।

ইতিমধ্যেই পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আরও কয়েক জনকে। পুলিশ জানাচ্ছে খুন হয়েছে, রাত ১২টা থেকে ২টোর মধ্যে। সেক্ষেত্রে পরিচিত কেউ জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। ব্যক্তিগত না ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণে খুন সেটাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন