সমশেরগঞ্জ

গ্রেফতার দুই দুষ্কৃতী, তবুও ঘুম আসে না কিশোরীর

দুই দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। কিন্তু ঘুমোতে পারছে না পনেরো বছরের মেয়েটা। ভুলতে পারছে না মায়ের মুখ। যে মা দুর্বৃত্তদের হাত থেকে তাকে বাঁচাতে গিয়ে ভোজালির কোপে মারা গিয়েছেন। ভাবতে-ভাবতে অসুস্থই হয়ে পড়েছে সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৭
Share:

আদলতের পথে। —নিজস্ব চিত্র।

দুই দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। কিন্তু ঘুমোতে পারছে না পনেরো বছরের মেয়েটা। ভুলতে পারছে না মায়ের মুখ।

Advertisement

যে মা দুর্বৃত্তদের হাত থেকে তাকে বাঁচাতে গিয়ে ভোজালির কোপে মারা গিয়েছেন। ভাবতে-ভাবতে অসুস্থই হয়ে পড়েছে সে।

সমশেরগঞ্জের ওই ঘটনায় রবিবার রাতেই আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রাহেদ আনসারি আর তার দাদা শফিকুল আনসারিকে পাকড়াও করে পুলিশ। সোমবার জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক মনোজিৎ সরকার তাদের সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

কিন্তু এই খুনে অন্যতম অভিযুক্ত, রাহেদের জামাইবাবু ফকির আনসারি এখনও অধরা। গোটা এলাকায় সে নানা কুকর্মের পান্ডা বলে পরিচিত। তার প্রশ্রয় ও প্ররোচনাতেই দুই ভাই শুক্রবার গভীর রাতে ওই কিশোরীকে তুলে আনতে তার বাড়িতে ঢুকেছিল বলে মনে করছেন এলাকার অনেকে। মেয়েকে ধরে তারা টানাটানি করছে দেখে মা ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তখনই রাহিদ তাঁর পেটে ভোজালি ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ফকির বেপাত্তা, তাকে খোঁজা হচ্ছে। এ দিনই বহরমপুরে গিয়ে পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করে মেয়েটি। পরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মামলাও সরছে বহরমপুরে। পুলি শ সূত্রের খবর, খুন ছাড়াও নাবালিকার যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ‘পকসো’ আইনে মামলা রুজু হওয়ায় বহরমপুরে একটি বিশেষ আদালতে তা স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। সেখানেই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কিশোরী গোপন জবানবন্দি দেবে। এসইউসি প্রভাবিত ‘মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠন’ এ দিন অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছে।

পুলিশের দাবি: রাহেদ অপরাধ কবুল করেছে। তার সঙ্গে কে-কে ছিল পুলিশকে তা-ও জানিয়েছে। পুলিশ আপাতত ভোজালিটি উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। জঙ্গিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে রাহেদ পুলিশকে বলেছে, “রাগ চড়ে গিয়েছিল বলেই ছুরিটা চালিয়ে দিয়েছিলাম।”

দু’জন গ্রেফতার হলেও আতঙ্কে আছে মৃতার পরিবার। তাঁর স্বামী জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন না। নাবালক তিন বোন আর এক ভাইয়ের সামনে যে বাবে মাকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা, সেই দৃশ্য তাদের মন থেকে মোছা কঠিন। মাঝেমধ্যেই চমকে ঘুম থেকে উঠছে তাঁদের চার ও পাঁচ বছরের দুই মেয়ে। তিনি বলেন, “বড় মেয়ে কিছুটা বুঝলেও বাকি তিন জন গত দু’দিন ধরে প্রায় কিছুই খাচ্ছে না। প্রায়ই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছে আট বছরের ছেলেটা। কীসের ইদ আমাদের?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন