Sahebnagar

মাচা থেকে আড্ডা, প্রশ্ন তহির কই

গ্রামের আটপৌরে মহিলা থেকে চায়ের দোকানের কারবারি, প্রশ্নটা রাখছেন সন্দেহের মোড়কেই— ‘তহিরকে পালিয়ে যেতে ,সাহায্য করেছে পুলিশ। আর কী গ্রেফতার করবে তাকে!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলঙ্গি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০৭
Share:

প্রতিবাদ: সাহেবনগরে পড়ছে পোস্টার। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।

সাহেবনগরে গুলি-কাণ্ডের পরে চার দিন কেটে গেলেও মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তহিরুদ্দিন মণ্ডল এবং তার অন্যতম সাগরেদ শামিম আখতারুজ্জুমান উরফে মিল্টন এখনও অধরা।

Advertisement

আর তা নিয়েই এলাকায় ফের দানা বাঁধছে অসন্তোষ, চাপা সন্দেহ। গ্রামের আটপৌরে মহিলা থেকে চায়ের দোকানের কারবারি, প্রশ্নটা রাখছেন সন্দেহের মোড়কেই— ‘তহিরকে পালিয়ে যেতে ,সাহায্য করেছে পুলিশ। আর কী গ্রেফতার করবে তাকে!’’

স্থানীয় নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা নিত্য বৈঠক করে মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও, গ্রামের সান্ধ্য আলোচনায় ফিরে ফিরেই উঠছে প্রশ্নটা— ‘পুলিশ আমাদের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করছে। আদতে পুলিশ তহিরকে আড়াল করতে চাইছে!’

Advertisement

যদিও জেলা পুলিশের বড় কর্তারা বলছেন, ‘‘তহিরুদ্দিন যেই হোক না কেন, যে দলের পোশাকই তার গায়ে থাকুক, এই ঘটনায় কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না তাকে।’’ জেলার পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব প্রায় একই সুরে রবিবারও বলেন, ‘‘খুব দ্রুত অভিযুক্তরা গ্রেফতার হবে,
নিশ্চিন্ত থাকুন।’’

যদিও পুলিশের অন্য একটা মহল থেকে শোনা যাচ্ছে, আদতে গ্রেফতার নয়, তহিরুদ্দিন আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। তাই এত বিলম্ব। ব্যাপারটি নিয়ে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে মধ্যস্থতা চলছে তহির গোষ্ঠীর। সেই প্রক্রিয়া চলছে বটে কিন্তু এখনও ফলপ্রসূ হয়নি। বিলম্বের
কারণ সেটাই।

বুধবারের ওই ঘটনা নিয়ে জেলা তৃমূলও যে অস্বস্তিতে জেলা নেতাদের অনেকেই তা কবুল করেছেন। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘পুলিশের নির্দেশ পেলেই আদালতে হাজির হবেন তহির, মিলিয়ে নেবেন।’’ বিরোধীরাও তেমনই ভাবছেন।

তৃণমূলের জেলা নেতা দূরস্থান, স্থানীয় নেতারাও গ্রামের পা দেননি। এ দিন অবশ্য সাহেবনগরে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি আমাদের কাছে নয়, এলাকার সাধারণ মানুষের কাছেও জলের মত পরিষ্কার। তহিরুদ্দিন-মিল্টন শাসকদলের নেতা হওয়ার ফলেই পুলিশ তাদের টিকি ছুঁতে পারছে না।

টিভির সামনে চুল আঁচড়ে বক্তব্য রাখছে ওই নেতা, অথচ পুলিশ তাদেরকে খুঁজে পাচ্ছে না এটাই খুব আশ্চর্যের বিষয়!’’ জলঙ্গির সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক ইমরান হোসেনের দাবি, ‘‘আদতে গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিশ এবং তহিরুদ্দিনের লুকোচুরি খেলা চলছে। তহিরুদ্দিন যা ঘটিয়েছে তা জলঙ্গি থানার ওসির নির্দেশে ঘটিয়েছে, ফলে কোনও ভাবে যেন সত্যটা সামনে চলে না আসে, সেই জন্য গল্পটা সুন্দরভাবে সাজানোর কাজ চলছে।’’

জলঙ্গির এক তৃণমূল নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘সীমান্ত এলাকার তহিরের প্রভাব কম নয়। তাকে গ্রেফতার করা খুব সহজ নয় পুলিশের কাছে। যা হবে অঙ্ক কষে হবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন