গাঁয়ে কর্তারা, ঘরে ফিরলেন এডস রোগী

বিস্তর টানাপড়েনের পরে সোমবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে পারলেন এডস আক্রান্ত যুবক। তবে তার আগে তাঁর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে হল স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কর্তাদের। তাঁদের বোঝাতে হল, মল থেকে এডস ছড়ায় না। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৯
Share:

চলছে বোঝানো। নিজস্ব চিত্র

বিস্তর টানাপড়েনের পরে সোমবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে পারলেন এডস আক্রান্ত যুবক। তবে তার আগে তাঁর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে হল স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কর্তাদের। তাঁদের বোঝাতে হল, মল থেকে এডস ছড়ায় না।

Advertisement

কৃষ্ণনগরের এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, এডস নিয়ে সচেতনতা প্রচারে ফাঁক রয়ে গিয়েছে। সে জন্যই এডস আক্রান্ত এক রোগীকে বাড়ি ফেরাতে সাহায্য নিতে হল প্রশাসনের। ওই যুবককে বাড়ি ফেরাতে শুধু গ্রামের লোকই নন, বাধা দিয়েছিলেন বাড়ির লোকও। তাঁরা সচেতন হলে কি এ ভাবে বাধার মুখে পড়তে হত ওই রোগীকে?

যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অরুণকুমার কোলে। তিনি বলেন, “আমরা নানা ভাবে মানুষকে সচেতন করে থাকি। এখানে ঠিক সচেতনতার অভাব নয়, অন্য পারিবারিক জটিলতার কারণে এমনটা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

Advertisement

এ দিন ওই যুবকের গ্রামে গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্য কর্তারা। কথা বলেন কৃষ্ণনগর-১ ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকও। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরে এডস আক্রান্তকে গ্রামে ঢুকতে দিতে রাজি হন সকলে। জেলা শাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দিখেছি। সকলকে বুঝিয়ে রোগীকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছি। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।”

শনিবার চিকিৎসক ওই ব্যক্তিকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার পরেও বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারছিলেন না তাঁর আত্মীয়েরা। রবিবার তাঁরা লিখিত ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। সোমবার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন সকালেই গ্রামে যান কৃষ্ণনগর সদর সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অরুণকুমার কোলে, কৃষ্ণনগর ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক স্বাতী দত্ত মুখোপাধ্যায়।

ছেলে বাড়ি ফেরার পরে তাঁর বৃদ্ধা মা বলেন, “খুব কষ্টে ছিলাম। ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুব ভাল লাগছে।” এডস আক্রান্ত ওই যুবক বলেন, “আমি বাঁচতে চাই। পরিবারের সঙ্গে থেকেই বাঁচতে চাই। বাড়ি ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’

প্রথম থেকে বিরোধিতা করলেও সোমবার প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তাদের দেখে উল্টো সুর গাইতে শুরু করেন গ্রামের অনেকে। রবিবার পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্য সুরেশ সরকার গ্রামে ঢুকতে দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। তবে এ দিন সেই অভিযোগ অস্বীকার

করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন