ছবির টিকিট বিক্রি গড়পড়তার চেয়ে বেশি

প্রথম সপ্তাহ ভালই কাটিয়ে গেল ‘ভূত’

গত সপ্তাহের শুক্রবার রাজ্য জুড়ে ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু কারও কোনও স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞার কথা জানা না গেলেও পরের দিনই ছবির প্রদর্শন বন্ধ করে দেয় কলকাতার হলগুলি। শাসক দল ও তার নেতাদের সম্পর্কে, সাম্প্রতিক কিছু আর্থিক কেলেঙ্কারি সম্পর্কে তির্যক মন্তব্যই তার আসল কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার 

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৫
Share:

‘ভবিষ্যতের ভূত’ ছবির পোস্টার।

মুক্তির পরের দিনই কলকাতার হলগুলি থেকে ‘অদৃশ্য’ হয়ে গিয়েছিল ‘ভবিষ্যতের ভূত’। কৃষ্ণনগরের হলে কিন্তু ভাল ভাবেই এক সপ্তাহ কাটিয়ে গিয়েছে ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-খ্যাত অনীক দত্তের এই নতুন ছবি।

Advertisement

গত সপ্তাহের শুক্রবার রাজ্য জুড়ে ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু কারও কোনও স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞার কথা জানা না গেলেও পরের দিনই ছবির প্রদর্শন বন্ধ করে দেয় কলকাতার হলগুলি। শাসক দল ও তার নেতাদের সম্পর্কে, সাম্প্রতিক কিছু আর্থিক কেলেঙ্কারি সম্পর্কে তির্যক মন্তব্যই তার আসল কারণ বলে মনে করছেন অনেকে। এর প্রতিবাদে সরব হয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই। তার মধ্যে রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বা বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মতো বিশিষ্টেরাও।

নদিয়ায় কিন্তু তার আঁচ বিশেষ পড়েনি। বরং কৃষ্ণনগরের ‘সঙ্গীতা’ প্রেক্ষাগৃহে নির্বিঘ্নেই ছবি চলেছে টানা সাত দিন— বিকেল ৪টে এবং সন্ধ্যা ৭টার শোয়ে। প্রশাসনিক বা দলীয় তরফে কোনও বাধা আসেনি। এবং ওই প্রেক্ষাগৃহের একটি সূত্রের দাবি, সাম্প্রতিক কিছু বাংলা ছবির তুলনায় এই ছবির টিকিট বিক্রি বেশিই হয়েছে।

Advertisement

সঙ্গীতা হলের এক কর্মী বলেন, “গত দু’মাসে আমাদের হলে যে ক’টা বাংলা সিনেমা চলেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে এই ছবিরই।” হল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত মাস চারেকের মধ্যে এক মাত্র ‘হইচই আনলিমিটেড’-এর টিকিট এ ভাবে বিক্রি হয়েছিল। তবে কোনওটির ক্ষেত্রেই টানা হাউজ়ফুল হয়নি। সঙ্গীতা হলের হিসেব বলছে, ‘রসগোল্লা’ বা ‘এক যে ছিল রাজা’-র ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহে শো প্রতি চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। সেখানে ‘ভবিষ্যতের ভুত’ ছবির ক্ষেত্রে বিক্রি হয়েছে ছয় থেকে সাত হাজার টাকার টিকিট। ফারাকটা যে বিরাট, তা যদিও নয়। রাজ্যের আরও সাত-আটটি হলে চলেছে এই অনীকের ছবিটি। সেখানেও কমবেশি একই অবস্থা বলে তাদের দাবি।

সঙ্গীতা সিনেমায় প্রায় ন’শো আসন আছে। এখনও পর্যন্ত শেষ হাউজ়ফুল হয়েছে ইদের দু’দিন সলমন খানের ‘রেস-থ্রি’ আর ‘ভাইজান’ ছবি। উৎসবের মেজাজ ছিল তার একটি বড় কারণ। উল্টো দিকে, ‘ভবিষ্যতের ভূত’ মুক্তির পরেই পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় জওয়ানেরা নিহত হয়েছেন। তাতে অনেকেই ছবি দেখার মেজাজ হারিয়ে ফেলেছেন বলে মনে করছেন হলের পোড়-খাওয়া কর্মীরা। তাঁদের মতে, তা না হলে টিকিট বিক্রি আরও বাড়ত।

দ্বিতীয় সপ্তাহের শুক্রবার অবশ্য নদিয়ার আর কোনও প্রেক্ষাগৃহে ফিরে আসেনি ভূত। তবে সঙ্গীতা হলের কর্মীদের এক জনের দাবি, ‘‘ছবিটা মনে হয় পাবলিকের ভালই লাগছে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ছবি তেমন না জমলে দর্শকদের অনেকেই মাঝপথে হল ছেড়ে বেরিয়ে যান। এই ছবিটার বেলায় কিন্তু তা হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন