CPM

জনসংযোগে জোট-বার্তা

বামফ্রন্টের বিভিন্ন শরিক তো বটেই কংগ্রেসের মেঠো নেতা-কর্মীরাও কৃষি প্রধান মুর্শিদাবাদের গ্রামীণ মানুষকে ওই আন্দোলনের জেরে যেন কাছে টানতে পারছেন বলে দু’তরফেই দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

মফিদুল ইসলাম

হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৬
Share:

পাশে: বামেদের জনসংযোগ। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।

কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলেও তা নিয়ে অস্বস্তির বিরাম ছিল না বাম-কংগ্রেসের। নীচুতলার কর্মীদের সামনে একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন ঝুলেই ছিল। কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদে সে সংশয় আরও প্রকট হয়ে উঠছিল দু’তরফের মেজ-সেজ নেতাদের ক্রমাগত মন্তব্যে। জোটকে সংঘবদ্ধ করার চেয়ে আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে একটা প্রচ্ছন্ন গোঁ দু’পক্ষের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের কিঞ্চিৎ দ্বিধায় রেখে দিয়েছে। সেই আবহে আচমকাই দু’পক্ষকে কিঞ্চিৎ কাছে এনে দিয়েছে যেন সিংঘুর কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলন।

Advertisement

বামফ্রন্টের বিভিন্ন শরিক তো বটেই কংগ্রেসের মেঠো নেতা-কর্মীরাও কৃষি প্রধান মুর্শিদাবাদের গ্রামীণ মানুষকে ওই আন্দোলনের জেরে যেন কাছে টানতে পারছেন বলে দু’তরফেই দাবি করা হয়েছে। বস্তুত ওই আন্দোলনে পরোক্ষে শামিল হয়ে বাম-কংগ্রেস দু’পক্ষই এখন জমসংযোগের কাজটা যেন এগিয়ে রাখতে চাইছে।

জেলা সিপিএমের এক তাবড় নেতা পরিষ্কার বলছেন, ‘‘সিংঘুর আন্দোলন আমাদের সুবিধা করে দিয়েছে। কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদেরও এই আন্দোলনে পাশে পেয়ে যাওয়ায় জোটের চেহারাটাই স্বচ্ছ হয়ে উঠছে ক্রমশ।’’ ভৌগলিক দূরত্ব মুছে সিংঘুর কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলন যেন জোটশক্তিকে সিলমোহর দিয়েছে। তা যে একটুও বাড়িয়ে বলা নয়, জেলা কংগ্রেসের এক নেতার কথাতেও তা স্পষ্ট, ‘‘কৃষি আইন নিয়ে আমাদের এক সঙ্গে লড়াই দেখে জোটের প্রশ্নে আস্থা পাচ্ছেন মানুষ।’’

Advertisement

তবে এ ব্যাপারে এগিয়ে সিপিএম-ই। গত কয়েক দিন ধরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে জাঠা বা মিছিল বের করে তারা ওই আইনের বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছে। যা একই সঙ্গে কেন্দ্র তথা বিজেপি’র বিরুদ্ধে জনমত তৈরির সব চেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র বলেই মনে করছে তারা। কোথাও মিছিল কোথাও বা পায়ে হেঁটে ওই আইনের বিরোধিতার সূত্রে স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে পুরনো আস্থা ফিরে পেতে চাইছেন সিপিএমের কর্মীরা। রবিবার সেই দাবিতে পথে নামে সিপিএমের হরিহরপাড়া এরিয়া কমিটি। এ দিন সকালে গরুর গাড়িতে লাল পতাকা সাজিয়ে বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে সিপিএম। কোথাও বা একই দাবিতে বেরিয়েছে
সাইকেলে মিছিল।

একেবারে পায়ে হেঁটে গ্রামীণ মানুষের দুয়ারে পৌঁছেও জোট এবং জনসংযোগের বার্তা দিচ্ছেন তাঁরা। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা হরিহরপাড়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক ইনসার আলি বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিধানসভা এলাকার প্রতিটি অঞ্চলেই এই কর্মসূচি চলছে। আমরা কৃষি আইনের বিরোধিতা কেন করছি সাধারণ মানুষকে তা বোঝানোর চেষ্টা করছি। সঙ্গে জোটের বার্তা দিচ্ছি।সাড়াও পাচ্ছি প্রবল।’’

নওদা ব্লকের এরিয়া কমিটির সম্পাদক শমীক মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তাদের কথা শুনছি। আমরা তাঁদের জোটের অপরিহার্যতার কথাও বলছি। আশা করছি নির্বাচনের আগে মানুষ সে কথা বুঝতে পেরে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন