প্রতীকী ছবি
অহেতুক আতঙ্ক ছড়িয়ে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরকে হয়রান করা হচ্ছে। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর শহর জুড়ে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে রায়পাড়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে দিন দুয়েক আগে ইটালি থেকে এসে এক জন এসে আশ্রয় নিয়েছেন, যাঁর প্রচণ্ড জ্বর।
বারবার ফোন যেতে থাকে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে। বিষয়টি জেনে মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সেখানে যান। বিশেষ চিকিৎসক দল নিয়ে হাজির হন মহকুমাশাসক মণীশ বর্মা। সঙ্গে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় যে, উইলিয়াম ফিলিপ আওয়েন নামে সেই ব্যক্তি আদৌ ইটালি থেকে আসেন নি। তাঁর বাড়ি লন্ডনে। বছর বাহাত্তরের ওই বৃদ্ধ এক জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স। গত বছর অগস্টে তিনি টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছেন। গত মাস দুয়েক ধরে কৃষ্ণনগরের ওই ফ্ল্যাটে আছেন। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন, এমন কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শেও আসেননি তিনি। তাঁকে লকডাউন চলাকালীন ঘরে থাকতে বলে কর্তাদের ফিরে আসতে হয়।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “ইটালি শুনে আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলাম। এক জন স্বাস্থ্যকর্মী বিশেষ প্রোটেকটিভ ইউনিট (মাথা থেকে পা পর্যন্ত মোড়া বিশেষ পোশাক) পড়ে গিয়েছিলেন। সেটা নষ্ট হয়ে গেল! এই আকালের বাজারে সেটা বড় ক্ষতি।”
সোমবার রাতেও শান্তিপুরের গোবিন্দপুরে বাড়ি ফেরা এক পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর নিয়ে গুজব ছড়ায়। খবর পেয়ে রাতেই তাঁর বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তার আগেই অবশ্য এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান ওই যুবক। পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা আক্ষেপ করছেন যে তাঁদের কর্মীরা ২৪ ঘণ্টা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। যদি এ ভাবে হয়রান করা হয় তা হলে একটা সময়ের পরে তাঁরা শরীর ও মনের দিক দিয়ে ভেঙে পড়বেন। তাতে বিপদই বাড়বে। নদিয়ার জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, “সমস্ত দিকে নজর রাখা হচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ালে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”