Coronavirus

হা-অন্ন বৃহন্নলার পাশে কে!

এই পরিস্থিতিতে  বৃহন্নলাদের সংগঠন ‘মধ্য বাংলার সংগ্রাম’ সেই বিশেষ জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৫
Share:

সাহায্য । নিজস্ব চিত্র

কেউ ট্রেনে কেউ বা বিহার-উত্তরপ্রদেশে গিয়ে নেচে-গেয়ে সামান্য আয় করেন। তাঁদের যৌথ সংসার চলে সেই আয়েই। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশ জুড়ে লকডাউন চলায় অন্যদের মতো গৃহবন্দি তাঁরাও। রুজির পথ তাই স্তব্ধ।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে বৃহন্নলাদের সংগঠন ‘মধ্য বাংলার সংগ্রাম’ সেই বিশেষ জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় চাল, আলু তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। ‘মধ্য বাংলার সংগ্রামের’ সম্পাদক অরুণাভ নাথ বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে আমাদের জনগোষ্ঠীর প্রায় সকলেই আয়ের পথ হারিয়েছেন। অন্য দিকে বাড়িতেও খাবার নেই। আমরা লোকজনের কাছে থেকে সাহায্য নিয়ে তাঁদের বাড়ি বাড়ি চাল ডাল পৌঁছে দিচ্ছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এখনও আমাদের পরিচয় বড় অস্পষ্ট সমাজের কাছে। অন্য সকলের পাসে সকলেই আছে, আমাদের পাসে কেউ নেই। তাই আমরাই সংমগঠনগত ভাবে আমাদের জনগোষ্ঠীরপাসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। তবে ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত খাবার সংগ্রহ করতে পারলে অন্য দরিদ্র লোকজনের কথাও আমরা ভাবব।’’ ওই সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৫১২ জন বহন্নলা রয়েছেন। তার মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা খুবই খারাপ। ইতিমধ্যে ২০ জনকে সাহায্য করা হয়েছে। বহরমপুরের কান্তনগরের তাপস মাঝি অন্য কয়েকজনের সঙ্গে কখনও বিহারে কখনও বা উত্তরপ্রদেশে গিয়ে নাচ-গান করেন। বিয়ে থেকে নানা অনুষ্ঠানে নাচ করে আয় করেই তাঁদের সংসার চলে। লকডাউনের জেরে তিনিও কাজ হারিয়েছেন। তাপস বলেন, ‘‘বৃদ্ধ বাবা কাজ করতে পারেন না, মায়ের প্যারালাইসিস। আমার আয়ে বাবা মাকে নিয়ে সংসার চলে। কিন্তু ঘরে টাকা নেই, খাবার নেই।’’ বহরমপুর খাগড়ার রুপান্তরকামী টোটন দাস শহরে এক জায়গায় ঘুগনি মুড়ি বিক্রি করেন। লকডাউনের জেরে তিনি কাজ হারিয়ে ঘরে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘‘বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সংসার। কাজ হারিয়ে পথে বসেছি। অসময়ে মধ্য বাংলার সংগ্রাম যা সাহায্য করছে তাতেই পেট ভরাতে হচ্ছে।’’

লকডাউনের এই দম চাপা আবহেও মানুষ একে অন্যের পাশে আছেন, এমন খবর হামেশাই মিলছে। কিন্তু তাঁদের পাশে কে? স্ত্রী-পুরুষের পরিচয়ের বাইরেও যে অন্যতর বিপুল জনগোষ্ঠী রয়ে গিয়েছে, তাঁদের পাশে কি শুধু তাঁরাই!

Advertisement

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন