Coronavirus

লকডাউনে চুল ছাঁটতে উঠোনই ভরসা

ইতস্তত করলেও শেষ পর্যন্ত সাহস করে শুরু হলো ক্ষৌরকর্ম। মাথার দু’একটা জায়গায় কেঁটে ছিড়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত লম্বা চুল থেকে মুক্তি মিলেছে ওই শিক্ষকের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৮
Share:

সেলুনে তালা। উঠোনেই মেয়েকে নেড়া করছেন মা। নিজস্ব চিত্র

চুলটা নেমে গিয়েছিল কানের নিচে। লকডাউনের বাজারে বন্ধ সেলুন, দিন কয়েক ধরে ঘরে বসে লম্বা চুল নিয়ে হাঁসফাঁস করছিলেন ডোমকলের আখেরিগঞ্জ হাইস্কুলের শিক্ষক সেলিম বিশ্বাস। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে পাড়ার মুদির দোকান থেকে তিন টাকা দিয়ে একটা ব্লেড কিনে দাদার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘আর পারছি না, এ বার নেঁড়া করে দে ভাই!’’

Advertisement

ইতস্তত করলেও শেষ পর্যন্ত সাহস করে শুরু হলো ক্ষৌরকর্ম। মাথার দু’একটা জায়গায় কেঁটে ছিড়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত লম্বা চুল থেকে মুক্তি মিলেছে ওই শিক্ষকের। মুণ্ডিত মস্তকে বার কয়েক মাথায় হাত বুলিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আহ..বড় আরাম ভাই!’’

কেবল সেলিম নয়, লক ডাউনের মধ্যে সেলুন বন্ধ থাকায় অনেকেই চুল কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শহর-গ্রামে। এত দিন যাঁরা সেলুনের চেয়ারে বসে আরাম করে চুল কাটাতে অভ্যস্ত, তারা এখন কোথায় যাবেন কিছুই ঠিক করে উঠতে পারছেন না। ফলে শেষ পর্যন্ত বিপাকে পড়ে অনেকেই আত্মীয়-স্বজনকে ধরে নেড়া করিয়ে নিচ্ছেন মাথা। সেলিম বিশ্বাস বলছেন, ‘‘লকডাউনের আগেই চুলটা কাটব ভেবেছিলাম, কিন্তু সুযোগ হয়নি। যে রবিবার চুল কাটবো বলে ঠিক করলাম, ঠিক সেদিনই জনতা কার্ফু। আর তারপর থেকেই শুরু হল টানা লকডাউন, ফলে আর চুল কাটা হয়নি। শেষ পর্যন্ত পাড়ার মুদির দোকান থেকে তিন টাকা দিয়ে ব্লেড কিনে দাদার হাতে ধরিয়ে দিয়ে প্রায় জোর করে নেঁড়া করে নিয়েছি।’’ এখানেই শেষ নয়, অনেকেই এখন ঘরে বসে নেড়া হওয়ার দৃশ্যের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন।

Advertisement

লকডাউনে সেলুন বন্ধের কারণেই নয়, অনেকেই আবার গৃহবন্দি থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নেড়া করে নিতে চাইছেন মাথাটা। কারণ এই সময়ে যেহেতু ঘরের বাইরে যেতেই হচ্ছে না, ফলে লোকলজ্জার ভয় নেই। অনেক পরিবারে মায়েরা সন্তানদের নেড়া করে দিয়ে কৌশলে ঘরে আটকে রাখার চেষ্টাও করছেন সহজে। কারণ নেড়া হলে অন্তত দিন কয়েক কচিকাঁচারা বাইরে যেতে চায় না লোকলজ্জায়। জলঙ্গির বাসিন্দা সেলিনা বিবির মেয়ের মাথায় ঝাঁকড়া চুল ছিল, তার উপরে কিছু দিন থেকে উকুন দেখা দিয়েছে মাথায়। ফলে তিনি চেষ্টা করছিলেন মেয়ের মাথাটা নেঁড়া করার। কিন্তু মেয়ে নাছোড়বান্দা, লম্বা চুলের ঝুটি বাধার সাধ অনেকদিনের। সেলিনা বলছেন, ‘‘জন্মের পরে নেড়া হয়নি মেয়ে। চুল কাটতে গেলেই গোঁ ধরে বসত, বাইরে বেরোতে পারব না। এই সুযোগটা কাজে লাগালাম। ঘরের উঠোনে টেনে বসিয়ে ব্লেড দিয়ে নেড়া করে দিয়েছি মেয়েকে।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন