Coronavirus

আড্ডা রুখতে মাচায় কাঁটা

সেই মাচায় আড্ডা রুখতে প্রশাসন চাপ তৈরি করে দোকানদারদের উপরে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০২:৪০
Share:

মাচায় বাবলাকাঁটা। নিজস্ব চিত্র

সারা দিন খেটেখুটে ফেরার পরে গ্রামের চায়ের দোকানের মাচায় বসে আড্ডা দেওয়াটা ছিল গ্রামের জীবনের স্বাভাবিক অঙ্গ। এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময় সেই মাচাই হয়ে উঠেছিল সব থেকে বিপজ্জনক। ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিকই হোক বা গ্রামের মানুষ, সেখানে নির্দিষ্ট দূরত্ব না মেনেই বসে গল্পগাছা করছিলেন। তাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়ছিল হু হু করে। কোনও কোনও এমন মাচায় ব্যবস্থা ছিল টেলিভিশনেরও। যা দেখতে ভিড় করতেন প্রবীণেরাও।

Advertisement

সেই মাচায় আড্ডা রুখতে প্রশাসন চাপ তৈরি করে দোকানদারদের উপরে। তাঁরাই গ্রামের লোকেদের বারণ করেন, মাচায় বসতে। কিন্তু সে বারণ সকলে শোনেননি। কিন্তু মুদিখানার দোকান তো খোলাও রাখতে হয়। তাই দোকানদারদের অনেকে মাচাতেই কাঁটা গাছ ফেলে রেখেছেন। তাতে যে চায়ের দোকান বন্ধ, তার মাচাতেও যে আড্ডা বসত সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

কুপিলার সরিফুল ইসলামের চায়ের দোকান জয়রামপুর ঘাটের উপরে। তিনি বলছেন, ‘‘এক দিকে প্রশাসনের চাপ, অন্য দিকে গ্রামের লোকের আব্দার। তাই কাঁটাসুদ্ধু বেগুন গাছই ফেলে রেখেছি মাচায়। তাতে মাচার আড্ডা কমেছে।’’ কাঁটাকোপরার এক ব্যবসায়ীর বক্তব্য, ‘‘মাচায় আড্ডা দেওয়াটা এলাকার মানুষের যেন রক্তে ঢুকে গিয়েছে। কিন্তু তা থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। ভিন রাজ্য থেকে ফেরা অনেকেই মাচায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তাই বাধ্য হয়েই কাঁটা ঝোপ মাচায় ফেলে রেখেছি।’’ তিনি বলছেন, মাচা খুলে ফেললে লকডাউন মিটে গেলে আবার তা তুলতে খরচ অনেক হত। তাই কাঁটাগাছই বেছে নিয়েছি। তাতে অনেকটাই কাজও হয়েছে। গ্রামের মানুষ জানান, সন্ধেবেলা চায়ের দোকানের মাচায় বসে আড্ডা যেমন হত, তেমন রাত গভীর হলে কোথাও কোথাও বন্ধ দোকানের সামনে ওই মাচাতেই বসত মদের আসর। সেটাও এর ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গ্রামের লোকের বক্তব্য, সংক্রমণের ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছেন তাঁরা, তাই জমায়েতের কাঁটা কাঁটাগাছ দিয়ে তুলে

Advertisement

ভালই হয়েছে। পুলিশও জানাচ্ছে, লকডাউনের পর থেকেই মাচার আড্ডার উপরে তাদের নজর ছিল। অনেক দোকান থেকে মাচা তুলেও দেওয়া হয়েছে। ভেঙেও দেওয়া হয়েছে। যাঁরা নিজে থেকেই সচেতন হয়ে কাঁটা দিয়ে রেখেছেন, সেগুলো আর ভাঙতে হয়নি। নির্বাচনের সময়ও মাচাগুলোকে এ ভাবেই নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হত।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন