বিজেপিতে বঙ্কিম ঘোষ

এমনটা যে ঘটতে চলেছে তা সকালেও কেউ ঘুণাক্ষরে টের পাননি বলে সিপিএম সূত্রের দাবি।

Advertisement

মনিরুল শেখ 

হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৫
Share:

চলছে বিজেপিতে যোগদান। নিজস্ব চিত্র

চলতি মাসের পয়লা তারিখে দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দিতে এসে পার্টি সদস্যদের তিনি ঘুরে দাঁড়ানোর কথা শুনিয়েছিলেন। রবিবার সকালেই দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য বহিষ্কার করা হয় বঙ্কিম ঘোষকে। আর এ দিন দুপুরেই কলকাতায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন বঙ্কিম ঘোষ। এমনটা যে ঘটতে চলেছে তা সকালেও কেউ ঘুণাক্ষরে টের পাননি বলে সিপিএম সূত্রের দাবি।

Advertisement

হরিণঘাটা কেন্দ্রের দু’বারের বিধায়ক ও শেষ বাম সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বঙ্কিমবাবু নিজেই বলছেন, ‘‘আসলে ভেবেছিলাম, ক’টা দিন পর যোগ দেব। তাই দলের কেউ কিছু টের পাননি। তবে এ দিন কলকাতায় বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের বহু নেতা থাকায় যোগদানটা সেরেই ফেললাম।’’

তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমার বিরুদ্ধে যা শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করার ওরা করুক। এখন তো আমি আর ওদের সঙ্গে নেই। ফলে ও সব নিয়ে ভাবতেও চাই না।’’

Advertisement

জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই বঙ্কিম ঘোষের আচরণ নিয়ে সন্দেহ হচ্ছিল। ওঁকে বোঝানোর চেষ্টাও হয়েছিল। তার পরেই তিনি বোঝেননি। ফলে এ দিন সকালেই বহিষ্কার করা হয়েছে।’’ বঙ্কিমবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, এ দিন সকালে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়নি, বরং সুমিত দে-র সঙ্গে দলীয় বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে।

বঙ্কিমের সঙ্গে নদিয়া জেলার বাম রাজনীতির সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। হরিণঘাটার জাগুলির বাসিন্দা বঙ্কিম ১৯৮৩ সালে পার্টির সদস্য হন। ওই বছরেই তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হন। ১৯৯৮ সালে হরিণঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন। ২০০১ সাল থেকে টানা দশ বছরের বিধায়ক ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরও বঙ্কিম ছিলেন বাম আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী।

বঙ্কিমের অভিযোগ, ‘‘দল আন্দোলন বিমুখ হয়ে পড়ার পর দলের কর্মীরা একে একে সকলেই চলে গেলেন বিজেপিতে। আমাকে ঘিরে যাঁরা থেকেছেন তাঁরাই লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে হারাতে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন।’’ সিপিএমের অনেকেই জানাচ্ছেন, শেষের দিকে বঙ্কিম একে হয়ে পড়েছিলেন। বঙ্কিম দলবদল নিয়ে বলছেন, ‘‘তৃণমূলের অত্যাচারের মধ্যে আর বাম রাজনীতি করা যাচ্ছিল না। অথচ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাইছিলাম। এই অবস্থায় বামেরাও প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছিল। তাই বিজেপির সঙ্গেই হাত মেলালাম। আবার সেই লড়াইয়ের ময়দানে নামলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন