বাজার জমল শেষ মুহূর্তে

জেলার যুবক সম্প্রদায় যাঁরা কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন, তাঁরা ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরে এসে কেনাকেটা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০০:২১
Share:

ইদের কেনাকাটা: বহরমপুরে। ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী

শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ইদের বাজার। ভিন রাজ্যের বিভিন্ন পরিযায়ী শ্রমিকেরা মুর্শিদাবাদে ফিরতেই কেনাকাটার বাজার জমে উঠেছে বলে জানান মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অফ কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য। তিনি বলছেন, ‘‘রোজার ইদে অনেকে বাড়ি ফিরতে পারেন না। তাঁরা ফেরেন কোরবানির ইদে। ফলে টাকা-পয়সা জমিয়ে বাড়ি ফিরে আসার পরেই জেলার বিভিন্ন বাজারে নতুন করে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু তা আশাপ্রদ নয়।’’

Advertisement

তবে এ বছর এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত। পচানোর জলের অভাবে জমিতে এখনও পাট পড়ে রয়েছে। অধিকাংশ চাষি পাট কাটতেই পারেনি। জেলা বণিকসভার এক কর্তা বলছেন, ‘‘পরব উপলক্ষে মানুষের মধ্যে বাড়তি অর্থ খরচের প্রবণতা কাজ করে। কিন্তু সমাজের একটা বড় অংশের মানুষের হাতে অর্থ না থাকায় তার প্রভাব পড়েছে বাজারে। বিভিন্ন ব্যবসায়ী আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।”

তবে জেলার যুবক সম্প্রদায় যাঁরা কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন, তাঁরা ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরে এসে কেনাকেটা করেছেন। এ ছাড়া সরকারি কর্মী-শিক্ষক-উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষ কিছু কেনাকাটা করেছেন, কিন্তু তা আশাপ্রদ নয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

Advertisement

এ দিকে রাত পোহালেই ইদুজ্জোহা। হরিহরপাড়া ব্লকের দস্তুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সামাউন সেখ বলছেন, ‘‘আমরা চাষের উপরেই নির্ভরশীল। বেশিরভাগ জমির পাট এখনও কাটা হয়নি। কিছু জমির পাট পচানো হয়েছে, কিন্তু তা ঘরে ওঠেনি। হাতে টাকা নেই তাই ইদের কেনাকাটাও হয়নি।’’

বিশেষ করে জেলার বিভিন্ন মফস্সলের বাজারে চাষিদের হাতে টাকা নেই। ফলে বিক্রি-বাট্টাও কম মফস্বল এলাকার দোকানদারদের। শনিবার হরিহরপাড়া বাজার এলাকায় পোশাকের দোকান থেকে জুতো এমনকি স্টেশনারি দোকানগুলিতে তেমন ভীড় নেই।

বস্ত্র ব্যবসায়ী বাইজিদ হোসেন বলছেন ‘‘মানুষের হাতে টাকা নেই তাই বিক্রি-বাট্টাও নেই।’’ অন্য এখ বস্ত্র ব্যবসায়ী নওসাদ আলি জানান কোরবানি ইদের আগে বেচাকেনা ভালো হয়। মানুষ পাটের উপর নির্ভর করে কেনাকাটা করে। এ বছর পাট জমিতেই রয়েছে, ফলে তেমন বেচাকেনা নেই।

ইদুজ্জোহাকে সামনে রেখে প্রতি বছর যেখানে জেলার বিভিন্ন বাজারে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়ে থাকে, এ বার সেখানে সেই আশা পূর্ণ হয়নি বলেও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।

হরিহরপাড়ার বস্ত্র ব্যবসায়ী আব্দুল আজিম বলেন, ‘‘যারা স্বচ্ছল তারা বহরমপুর গিয়ে কেনাকাটা করেন। আমাদের খদ্দের মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ। তাঁদের হাতে টাকা নেই। তাই ইদের আগে ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ।’’

ইদের কেনাকাটা নিয়ে হতাশ বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তী। তিনি বলছেন, ‘‘এটাই সার্বিক জেলার চিত্র। ইদের কেনাকাটা তো আশাপ্রদ নয়। এমনকি পুজোর বাজার নিয়েও এখন থেকেই চিন্তিত আমরা। গত কয়েক বছরে এই পরিস্থিতি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন