Saraswatti Puja

ফুচকা-তেঁতুলজল থেকে জগন্নাথ, থিমেই বাজিমাত

পুজোর সকালেই যার উত্তর পেলেন জিজ্ঞাসুরা। বালিতে ভাজা ফুচকা দিয়ে আদ্যোপান্ত মোড়া মণ্ডপের সঙ্গে থিমের সরস্বতীকে শেষপর্যন্ত চমৎকার মেলালেন ব্যানার্জি পাড়ার ফ্রেন্ডস ক্লাবের আয়োজকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪১
Share:

জগন্নাথেই ধরা দিয়েছেন সরস্বতী। ডান দিকে, মণ্ডপ যেন ফুচকার দোকান। ছবি: প্রণয় দেবনাথ।

‘ফুচকা ইজ লাভ, তেঁতুলজল ইজ ইমোশন’— শহর জুড়ে সাড়া ফেলেছিল সরস্বতী পুজোর থিমের অভিনব এমন পোস্টার। কৌতূহলীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। বলাইবাহুল্য, সরস্বতীর সঙ্গে ফুচকা-তেঁতুলজলকে থিম মেকার মেলাবেন কী করে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছিল উৎসাহীদের মধ্যে।

Advertisement

পুজোর সকালেই যার উত্তর পেলেন জিজ্ঞাসুরা। বালিতে ভাজা ফুচকা দিয়ে আদ্যোপান্ত মোড়া মণ্ডপের সঙ্গে থিমের সরস্বতীকে শেষপর্যন্ত চমৎকার মেলালেন ব্যানার্জি পাড়ার ফ্রেন্ডস ক্লাবের আয়োজকেরা। শিল্পী অরূপ সাহার কথায়, ‘‘সরস্বতীকে নিয়ে বাঙালির আবেগ প্রচলিত দেবদেবীর থেকে অনেকটাই আলাদা। প্রত্যেক প্রজন্ম তাদের মতো করে সরস্বতীকে রূপ কল্পনা ও নির্মাণ করে। আমাদের মনে হয়েছে ফুচকা বা তেঁতুলজল আসলে তো এই সময়ের প্রতীক। যা দিয়ে সরস্বতীর প্রকাশ সম্ভব।”

প্রায় একই ভাবনায় ভিন্ন রূপকল্পে সরস্বতী গড়েছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শুভ্রা চক্রবর্তী। নিজের হাতে গড়া সরস্বতী মূর্তির সঙ্গে প্রথাগত সরস্বতীর মিল নেই। একনজরে দেখে মনে হতেই পারে, সেটি জগন্নাথ মূর্তি। সঙ্গে হাঁসই সরস্বতীর সঙ্গে মিস খুঁজে পেতে সাহায্য করছে। এমন অভিনব ভাবনার কারণ ব্যাখ্যা করে শুভ্রা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সেই অর্থে প্রতিটি দেবদেবীর মূর্তি, যা আমরা দেখে থাকি তা কোনও না কোনও শিল্পীর কল্পনা। আমার কল্পনায় সরস্বতী এভাবেই ধরা দিয়েছেন।” যদিও সরস্বতীর এই রূপ বদল যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। সরস্বতীর সঙ্গে তাঁর সখ্যতা বহু বছরের। প্রায় প্রতি বছরই চারপাশের নানা জিনিস দিয়ে নিজের হাতে সরস্বতীর মূর্তি গড়ে পুজো করেন তিনি। ইতিমধ্যেই মাটি ছাড়াও ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ, পাট, কাঠের চামচ, কাগজের কোলাজ, সিল্কের সুতো, কখনও পোড়ামাটির হাঁড়ি কলসী প্রদীপ-পিলসুজের মতো নানা উপকরণ দিয়ে মূর্তি গড়েছেন।

Advertisement

তেরো পার্বণের নবদ্বীপে সরস্বতী ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছেন। মায়াপুরে বিরাট বিরাট পুজো, মেলা, আলোকসজ্জার বহরে চমকে উঠতে হয়। অন্যদিকে বড় আকারের প্রতিমা এবং থিমের বাড়বাড়ন্ত নবদ্বীপের সরস্বতী পুজোর নতুন প্রবণতা। যোগনাথতলা সরস্বতী মাতা পুজো কমিটি প্রথম শহরে বড় আকারের সরস্বতী পুজো শুরু করেছিল। তাদের এবছরের থিম কেদারনাথ মন্দির। প্রতি বছরের মতো এবারও ডাকের সাজের সাবেক সরস্বতীর মূর্তি নজর কেড়েছে। তাদের আনুমানিক বাজেট প্রায় দেড় লক্ষ। প্রাচীন মায়াপুরের পুজো উদ্যোক্তা কল্যাণ চক্রবর্তী জানান, তাঁদের বাজেট প্রায় লাখ টাকা। প্রতিমা নজরকাড়া।

থিমের দেখা মিলেছে নবদ্বীপে অন্যতম দুই স্কুল, বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয় এবং হিন্দু স্কুলের পুজোতেও। বকুলতলার থিম বাংলা সিনেমা। হিন্দুস্কুলের থিম পুতুল। থিমে বাজিমাত করেছে ফ্রেন্ডস ক্লাব। প্রতিমা দেখে মণ্ডপ থেকে বেরোতেই হাতে হাতে ফুচকা। একদম বিনামূল্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন