জয়নগর থেকে জয়পুর যাওয়ার মাটির রাস্তার বেহাল দশা।
কৃষ্ণনগর-বগুলা রাজ্য সড়কের দু’পাশে প্রচুর বসতি আছে। কিন্তু বর্ষা হলেই নয়ানজুলির জল উপচে পড়ে। ভেসে যায় রাস্তাঘাট। বাড়ির উঠোন।
নিখিল সরকার, হাজারিনগর
নয়ানজুলির উপরে মাটির বাঁধ দেওয়া আছে। তাই জল বের হতে পারে না। আমরা ওই মাটির বাঁধগুলোতে ছোট ছোট কার্লভাট বানাব। সিমেন্টের পাইপ বসানোর পরিকল্পনা করেছি। যাতে বর্ষার জল বেরিয়ে যেতে পারে।
খাদ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড সঠিক ভাবে বন্টন হয়নি। যোগ্য ব্যক্তিরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ বহু স্বচ্ছল পরিবার সুবিধা নিচ্ছে।
মাধবচন্দ্র বিশ্বাস, চন্দনপুকুর
বিষয়টা নিয়ে আমরাও বিভ্রান্তির মধ্যে ছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, অথচ এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা ৩-আর ফর্ম ফিল আপ করে জমা দিন।
একশো দিনের কাজে আমরা দু’ভাবে লাভবান হচ্ছিলাম। এক দিকে যেমন এলাকার উন্নতি হচ্ছিল, তেমনই গরিব মানুষের কর্ম সংস্থান হচ্ছিল। কিন্তু এখন দেখছি, একশো দিনের কাজ প্রায় বন্ধ।
মাধবচন্দ্র বিশ্বাস, চন্দনপুকুর
কেন্দ্র একশো দিনের কাজের যে গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছে, তাতে কাজের সুযোগ খুব কম। তবুও আমরা তার ভিতর থেকে কাজের সুযোগ তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আমাদের পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। ফলে রাতে পথ চলাই কঠিন। এটা নিয়ে কি পঞ্চায়েতের কোন পরিকল্পনা আছে।
অনুপম রায়চৌধুরী, পেঁপেবাগান।
সব গ্রামেই আলোর সমস্যা। এই আর্থিক বছরে আমরা নিজেদের তহবিল থেকে ১ লক্ষ টাকা খরচ করে প্রতিটি গ্রামে ৮-১০টা করে আলো লাগিয়েছি। এই বছর আরও হবে। এ ছাড়া সাংসদ তহবিল থেকে ইটেবেড়িয়া, রাধেশ্যাম বাজার ও চিত্রশালী হাসপাতাল চত্বরে উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসাব।
আমাদের পঞ্চায়েতের অনেক এলাকায় পিএইচই-র পানীয় জল সরবরাহের পাইপ লাইন যায়নি। কিছু কিছু এলাকায় ট্যাপকলের ব্যবস্থা করলেও বেশিরভাগ এলাকার মানুষ এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাড়ি বাড়ি সংযোগের কথা ছিল। সেটাও হল না।
কালীদাস বিশ্বাস, ঢাকুরিয়া
পিএইচই প্রাথমিক ভাবে জল সরবরাহ করছে। ফলে সব জায়গায় এখনও সমান ভাবে সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি বাড়ি সংযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তবে কিছু দিনের মধ্যেই ওরা পুরো দায়িত্বটা আমাদের উপরে দিয়ে দেবে। তখন আমরা নিজেদের মতো করে পুরো বিষয়টা পরিচালনা করতে পারব।
আমাদের পঞ্চায়েতে কোনও মিটিং হল নেই। ফলে নানা সময় বিভিন্ন কর্মসূচির ক্ষেত্রে আমাদের খুবই সমস্যা হয়। বিষয়টা নিয়ে ভাবা উচিত পঞ্চায়েতের।
আশিস ঘোষাল, পঞ্চায়েত কর্মী
ভারতমালা প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েত ভবন পুরোটাই ভাঙতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমাদের অন্যত্র নতুন ভবন তৈরি করতে হবে। তখন একসঙ্গে পুরোটাই করা হবে।
আরামডাঙা গ্রামের মাটির রাস্তা। বর্ষায় জল জমে। কাদা হয়। জল সরানোর পাশাপাশি রাস্তা পাকা করার ব্যবস্থা করা যায় কি?
অলোকা বিশ্বাস, আরামডাঙা
আপনাদের গ্রামে জল সরানোর জন্য রাস্তার নীচে সিমেন্টের পাইপ বা হিউম পাইপ বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্ষার আগেই সেটা করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া গ্রামেরই অর্ধেক এলাকায় সিমেন্টের নিকাশি ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। বাকিটাও করে দেওয়া হবে।
আমার বাড়ি জয়পুর গ্রামে। রাস্তা ইটের হলেও খুবই বেহাল দশা। ইটের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না। বর্ষায় জল জমে কাদা হয়। বাচ্চাদের স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়।
মঙ্গলী বিশ্বাস, জয়পুর
আপনাদের গ্রাম পঞ্চায়েতের একেবারে প্রান্তে। রাস্তাটাও অনেক বড়। প্রায় ৭ কিলোমিটার। পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে গত বছরই চার লক্ষ টাকা খরচ করে রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। পুরো রাস্তা পিচের করার মতো টাকা পঞ্চায়তের নেই। আমরা জেলা পরিষদের কাছে প্রকল্প তৈরি করে দিয়েছি। তবে সুখবর, সেটা অনুমোদনও হয়ে গিয়েছে।
প্রচুর আদিবাসী পরিবার রয়েছে, যাদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় নাম আছে। কিন্তু তারা ঘর পাচ্ছেন না। কেন?
মদন বিশ্বাস,চিত্রশালী কুঠিরপাড়া
যাদের নিজস্ব জমি আছে, তাদের প্রথম কিস্তির টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাদের নিজস্ব জমি নেই, আইনত তাদের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না।
বহু গরিব মানুষের মাথার উপরে ছাদ নেই। অথচ তারা সরকারি ঘর পাচ্ছেন না। এই বিষয়ে কী পঞ্চায়েতের কিছু করার আছে?
ঊষা বিশ্বাস, জয়পুর
এমন অভিযোগ আমরাও পাচ্ছি। যাঁরা যোগ্য, তাঁদের অনেকের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। তাঁদের নাম আবার নতুন করে নথীভূক্ত করতে বিশেষ গ্রামসভা করা হয়েছে। সেই সভা থেকে আমরা নতুন করে ১১০৬টি নাম প্রস্তাব করেছি।
চিত্রশালী হাসপাতালে সঠিক পরিকাঠামো নেই। চিকিৎসকরা ঠিক মতো আসেন না। হাসপাতালের চারপাশে পাঁচিল দেওয়া প্রয়োজন। সন্ধ্যে নামলেই সমাজবিরোধীদের আনাগোনা বাড়ছে। চলছে নানা অসামাজিক কাজ-কর্ম।
ভবেশ বারুই, ইটেবেড়িয়া
হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব স্বাস্থ্য দফতরের। এতে আমাদের কোনও হাত নেই। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছি।
একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পেতে গেলে জবকার্ড হোল্ডারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকাটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ব্যাঙ্ক তাঁদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। ফলে তারা অ্যাকাউন্টের অভাবে কাজ করতে পারছেন না।
কৌশিক বিশ্বাস, ঢাকুরিয়া
এর আগেও এই ধরনের সমস্যা হয়েছিল। আমরা তখন ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করে দিয়েছিলাম। আবার সেটা শুরু হয়েছে। এ বার প্রয়োজনে বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাব।