নিজস্ব চিত্র
শুখা মরসুমে নদীর জলস্তর নেমে যাওয়া নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর গরমকালে ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠে চর। কিন্তু অন্য বার যেখানে ‘বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে’, এ বার সেখানে সমস্যা শুরু হয়ে গিয়েছে চৈত্রের শুরু থেকেই।
ফলে নৌকাযাত্রীদের পারাপারে বাড়তি সময় লাগছে। জানা গিয়েছে, লালগোলা ব্লকের শ্যামপুর ও সাগরদিঘি ব্লকের বালিয়া ঘাট পারাপারের মাঝে প্রায় চারশো মিটার এলাকা জুড়ে ভাগীরথীর উপরে চর পড়েছে। চরের কারণে শ্যামপুর-বালিয়া ঘাট পারাপারের নৌকাগুলিকে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। ফলে সময়ও লাগছে অনেক বেশি।
এখন প্রতি দিন শ্যামপুর-বালিয়া ঘাট পারাপার করেন বালিয়া পঞ্চায়েতের বালিয়া, বংশীয়া, রামনগর, পিল্কী, নওপাড়া, নয়নডাঙা, গোপালপুর, কুঠিপাড়ার পাশাপাশি মণিগ্রাম পঞ্চায়েতের মণিগ্রাম, ছামুগ্রাম, বিষ্ণুপুর, চাঁদপাড়া, দোগাছি, গাদী, সাহেবনগরের মতো বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। একই ভাবে লালগোলা ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের, বিশেষ করে পাইকপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার লোকজনকে প্রতি দিন নদী পেরোতে হয়।
পাইকপাড়ার রাজারামপুরের বাসিন্দা মিঠু দাস জানান, লালগোলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ আনাজ বিক্রির জন্য প্রতি দিন বালিয়া কাঁচা আনাজের আড়তে যান। এ ছাড়াও প্রতি দিন কয়েক হাজার মানুষ ঘাট পারাপার করেন। এখন ভাগীরথীর উপরে চর পড়ার কারণে তাঁদের নৌকা পারাপারে বাড়তি সময় লাগছে।
উত্তর বালিয়ার সিংহপাড়ার বাসিন্দা লক্ষ্ণণ দাস জানান, চরের কারণে নৌকা ঘুরে যেতে হচ্ছে প্রায় চারশো মিটার মতো। তাতে সময়ও বেশি লাগছে। আগে যেখানে বালিয়া-শ্যামপুর পার হতে মিনিট দশেক সময় লাগত, এখন সেখানে পার হতে প্রায় আধ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে।
শ্যামপুরের এক ঘাট মালিক রাজকুমার দাস জানান, এ বছর চরের সীমানা আরও বেড়েছে। নৌকা সরাসরি পূর্বপাড় থেকে পশ্চিমপাড়ে যেতে পারছে না। প্রায় চারশো মিটার পথ ঘুরে পশ্চিমপাড়ের বালিয়া ঘাটে পৌঁছাতে হচ্ছে। তাতে বাড়তি সময় লাগছে। খরচও বেশি হচ্ছে। কিন্তু যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাচ্ছে না।
ভাগীরথী বোটম্যান রিভার ফেরি সার্ভিসের সম্পাদক বলরাম ঘোষ জানান, নতুন করে ঘাটে ফরাস পাততে হচ্ছে। ফরাস প্রতি প্রায় ছ’হাজার টাকা খরচ। ফরাক্কার এনটিপিসিতে বড় স্টিমারে যে কয়লা বয়ে নিয়ে যায়, জল কমে যাওয়ার জন্য ওই স্টিমার এখন নদীর মাঝপথ দিয়ে নয়, পূর্বপাড় দিয়ে যাচ্ছে। মাঝপথ দিয়ে ভুটভুটি নৌকাও
যেতে পারছে না।