খুনে যাবজ্জীবন বাবা ও সৎ মায়ের

সাড়ে ছ’বছরের শিশুকন্যাকে খুন করার অপরাধে বাবা ও সৎ মায়ের আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক। একই সঙ্গে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৩
Share:

সাজা: ঘোষণার পরে। নিজস্ব চিত্র

সাড়ে ছ’বছরের শিশুকন্যাকে খুন করার অপরাধে বাবা ও সৎ মায়ের আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক। একই সঙ্গে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও এক বছর অতিরিক্ত কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মঙ্গলবার নদিয়ার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক জিমুতবাহন বিশ্বাস এই নির্দেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী সৌমেন দত্ত এদিন জানান, “এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব।”

Advertisement

সাজাপ্রাপ্তেরা হল অভিজিৎ দাস এবং মৌটুসি বৈষ্ণব দাস। অভিজিৎ হাসখালি ব্লকের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক। তার বাড়ি কৃষ্ণনগরের জোড়াকুঠি এলাকায়। তবে সে পৈতৃক ভিটে ছেড়ে নগেন্দ্রনগরে ভাড়া বাড়িতে থাকত। মৃত শিশুটির নাম অনুষ্কা দাস। সে শহরে একটি বেসরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।

এ দিন রায় দেওয়ার আগে বিচারক সাজাপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনারা ঘৃন্যতম অপরাধ করেছেন। এর সাজা ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সাজার বিষয়ে আপনারা কী বলবেন?’’ দুই অপরাধীর বক্তব্য, ‘‘আমরা নির্দোষ। ক্ষমা করুন।’’ এ দিকে সাজা শুনে মৃতের মা প্রিয়াঙ্কার চোখের কোনায় জল চলে আসে। কান্না জড়ানো গলায় তিনি বলেন, “আমার মেয়েটা বিচার পেল। এর জন্য আইনজীবী, পুলিশ—সকলকেই ধন্যবাদ জানাই।’’

Advertisement

সরকার পক্ষের আইনজীবী অর্ণব গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ২০১৫ সালের জুন মাসে অভিজিতের সঙ্গে অনুষ্কার মা প্রিয়াঙ্কা সরকারের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর প্রিয়াঙ্কা নবদ্বীপের তেঘরিপাড়ায় বাবার বাড়িতে চলে যান। অনুষ্কা তার বাবার কাছে থেকে যায়। ওই বছরের শেষের দিকে ঘূর্ণির বাসিন্দা মৌটুসি বৈষ্ণব বিয়ে করে অভিজিৎ। মৌটুসি সৎ মেয়ে অনুষ্কাকে সহ্য করতে পারত না। সে অনুষ্কার উপর নির্যাতন করত। এ ব্যাপারে অভিজিতেরও প্রচ্ছন্ন সায় ছিল।

২০১৬ সালের ৯ মে সন্ধ্যায় শোওয়ার ঘর থেকে অনুষ্কার দেহ উদ্ধার হয়। তার মাথার পিছন দিকে আঘাত ছিল। ঘটনার পরের দিন অনুষ্কার মা প্রিয়াঙ্কা কোতোয়ালি থানায় চারজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিজিৎ ও তার মা কল্পনা দাস, মৌটুসি ও তার বাবা গৌর বৈষ্ণবকে ধরে। পুলিশ যথা সময়ে চার্জশিট জমা দেয়। চার্জশিটে অভিজিতের মা এবং মৌটুসির বাবা নাম বাদ পড়ে।

অন্যদিকে অভিজিৎ হাইকোর্ট থেকে জামিন পায়। এ বছরের প্রথমের দিকে মৌটুসিও হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন। সোমবার বিচারক তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন