একমাত্র মেয়ের বিয়ে, নিমন্ত্রণ করতে গিয়ে মৃত বাবা

বিয়ে নিয়ে মেতে ছিল মজুমদার পরিবার। কেনাকাটা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই আনন্দের আবহে বজ্রাঘাতের মতো আসে মৃত্যুর খবর। ঘনিষ্ঠদের এখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। থম মেরে গিয়েছে গোটা বাড়ি। সব উৎসব থেমে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাকদহ শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

একমাত্র মেয়ের বিয়ে আগামী বৈশাখ মাসে। নিমন্ত্রিত অনেকে। আয়োজনে ত্রুটি রাখতে চাইছিলেন না কোনও। বেশ কিছু দিন ধরেই নিমন্ত্রণ শুরু করেছিলেন আত্মীয়বন্ধুদের। গত রবিবার নিমন্ত্রণ করে ফেরার পথে গাড়ির ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন বছর ষাটের নির্মল মজুমদার এবং তাঁর ভাইপো বছর ছাব্বিশের দেবাশিস মজুমদার। ঘাতক গাড়ি তাঁদের পিষে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে দু’জনের মৃত্যু হয়।

Advertisement

বিয়ে নিয়ে মেতে ছিল মজুমদার পরিবার। কেনাকাটা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই আনন্দের আবহে বজ্রাঘাতের মতো আসে মৃত্যুর খবর। ঘনিষ্ঠদের এখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। থম মেরে গিয়েছে গোটা বাড়ি। সব উৎসব থেমে গিয়েছে।

বর্ধমান জেলার রাজপুর ভাতশালা পঞ্চাননতলা বাজার এলাকায় বাড়ি নির্মল মজুমদারের। তিনি একটি সমবায়ের ম্যানেজার ছিলেন। আগামি ৫ বৈশাখ কলকাতার বেহালায় তাঁর একমাত্র মেয়ে নীলাঞ্জনার বিয়ে ঠিক হয়েছে। শুক্রবার বিকালে মোটরবাইকে বাড়ি থেকে উত্তর ২৪ পরগনার গাদামারা এলাকায় নিজের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ করতে। সেখান দু’দিন ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ভাইপো দেবাশিস। রবিবার দুপুরে সেখান থেকে খেয়ে বেরিয়েছিলেন চাকদহে ঘুঘিয়া এলাকায় আর এক আত্মীয়ের বাড়ী নিমন্ত্রণ করতে। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর আগে রাস্তাতেই মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মারা যান দু’জনে। রবিবার বিকালে এদের চাকদহ থানার শিমুরালি চৌমাথার কাছে নিখরগাছি এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে পড়ে থাকে দেখেন এলাকার মানুষ।

Advertisement

জাতীয় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। সেই সময় শিমুরালি সংস্কৃত সংঘের মাঠে দিবারাত্র ফুটবল খেলার উদ্বোধন করে ফিরছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রত্না ঘোষ ও চাকদহ শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি সাধান বিশ্বাস। মন্ত্রী নিজে গাড়ি থেকে নেমে যানজট সামলাতে থাকেন।

নির্মলবাবুর এক আত্মীয় দীপক সরকার বলেন, “গাঁদামারা থেকে আমাদের বাড়ি নিমন্ত্রণ করতে আসার কথা ছিল। আর আসা হল না। একমাত্র মেয়ের বিয়ে নিয়ে খুব আনন্দে ছিলেন। সব শেষ হয়ে গেল!’’চাকদহ থানার সামনে দাঁড়িয়ে বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুধীর ঘোষ বলেন, “ওঁর পরিবারের সঙ্গে আমাদের খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে। উনি যে সমবায়ের ম্যানেজার ছিলেন আমি তার চেয়ারম্যান। সব ব্যাপারেই আমার সঙ্গে আলোচনা করতেন। মেয়ের বিয়ে নিয়েও অনেক আলোচনা হয়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন