এখন মাসির বাড়িতে জগন্নাথদেব

কেক থেকে কচুরি, ভোগে কী নেই!

সোজা রথ থেকে উল্টো রথ পর্যন্ত আট দিন মাসির বাড়িতে জগন্নাথদেবের ভোগের তালিকায় দেশি-বিদেশি ব্যঞ্জনের এমনই সহাবস্থান এখন নবদ্বীপ, মায়াপুর বা হবিবপুরের অস্থায়ী গুন্ডিচাতে।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০১:৪৫
Share:

একাকার: জগন্নাথদেবের ভোগের ঘরে এখন বিবিধের মাঝে মিলন মহান। ৫৬ রকম ভোগ দিয়ে পুজো করার কথা। তবে সেটা দাঁড়ায় একশো ছাপান্ন ভোগে। মায়াপুর ইস্কন মন্দিরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

জগন্নাথদেব এখন মাসির বাড়িতে। বছরে একবারই আসেন। ফলে সেখানে এখন সাজ সাজ রব। এমনিতেই ভোজন রসিক দেবতা হিসেবে তাঁর জগৎ জোড়া পরিচিতি। ফলে মাসির বাড়ির রান্নাঘরে এখন তুমুল ব্যস্ততা।

Advertisement

ইতালির পাস্তার সঙ্গে ভারতীয় পরমান্ন, কোরিয়ার ম্যাকরনির পাশে বাংলার মালপোয়া, চিনের চাউমিন থেকে উত্তর ভারতের চাপাটি, পিৎজা থেকে পুষ্পান্ন বা পুডিং থেকে পান্তুয়া, বিস্কুট থেকে বাতাসা কিংবা কেক থেকে কচুরি— সব মিলিয়ে জগন্নাথদেবের ভোগের ঘরে এখন বিবিধের মাঝে মিলন মহান।

সোজা রথ থেকে উল্টো রথ পর্যন্ত আট দিন মাসির বাড়িতে জগন্নাথদেবের ভোগের তালিকায় দেশি-বিদেশি ব্যঞ্জনের এমনই সহাবস্থান এখন নবদ্বীপ, মায়াপুর বা হবিবপুরের অস্থায়ী গুন্ডিচাতে।

Advertisement

মায়াপুর ইস্কনের রমেশ দাস জানান, প্রতিদিন জগন্নাথদেবকে ৫৬ রকম ভোগ দিয়ে পুজো করার কথা। তবে সেটা দাঁড়ায় একশো ছাপান্ন ভোগে। এবার গুণ্ডিচা তৈরি হয়েছে ইস্কনের মূল মন্দিরের উল্টো দিকে প্রভুপাদ ঘাট সংলগ্ন মাঠে। সেখানেই ভোগের রান্নাবান্না। বিরাট মণ্ডপে কয়েকশো মাটির হাঁড়িতে নিবেদন করা হচ্ছে ভোগ। আর সেখানে কী কী পদ থাকে বলার থেকে কী থাকে না বলা সহজ। ভোর সাড়ে চারটে থেকে শুরু হয়। বেলা সাড়ে এগারোটার মধ্যে মধ্যে তৈরি হয়ে যায় ভোগ

অন্নেরই কত রকমফের। সাদা অন্ন, পুষ্পান্ন, সব্জি পোলাও, মশলা পোলাও, ফ্রায়েড রাইস, লেমন রাইস, মিক্সড ভেজ রাইস, জিরা রাইস, নারকেল রাইস, তেঁতুল রাইস, দই ভাত। রুটির মধ্যে চাপাটি, গমের রুটি, সেঁকা রুটি, ভাপা রুটি, কচুরি, ডালের কচুরি, দই চাপাটি, আলুর পরোটা, ফুলকপির পরোটা, মশালা পরোটা, ভাজাপুরি, ডালপুরি, কলাপুরি, রাধাবল্লভী ইত্যাদি। ডালের মধ্যে জগন্নাথের প্রিয় মিষ্টি ডাল ছাড়াও, মুগ ডাল, ছোলার ডাল, মটর ডাল, সম্বর ডাল, পকোড়া ডাল, টম্যাটো ডাল, পালং ডাল, টক ডাল, তেতো ডাল ইত্যাদি।

হবিবপুরের জগন্নাথ রানাঘাট স্বাস্থ্যোন্নতি ময়দানের মাসির বাড়িতে ম্যাকরনি, পাস্তা, চাউমিন, ভেজ কাটলেটের সঙ্গে ইডলি ধোসা, চানাবাটোরা, ভেজিটেবিল রোল, আলুর চপ, আলুর বড়া, রসগোল্লা, ল্যাংচা, ছানার জিলিপি, গোলাপজাম-সহ পঞ্চব্যঞ্জনে আপ্যায়িত হচ্ছেন। সঙ্গে খিচুরি, তরকারি, ভাজা, পায়েস তো আছেই।

নবদ্বীপের চৈতন্য জন্মস্থান মন্দির, সারদেশ্বরী আশ্রম বা দেবানন্দ গৌড়ী মঠ, জগন্নাথ বাড়ির ভোগেও একই রকমের প্রাচুর্য। ওইসব মঠের প্রধানেরা জানাচ্ছেন, স্বয়ং মহাপ্রভু যে জগন্নাথদেবকে পুজো করতেন তাকে নিয়ে নবদ্বীপের মঠমন্দিরে উন্মাদনা থাকাটাই তো স্বাভাবিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন